অ্যাসাঞ্জের বিষয়ে ১৪০ ‘অসত্য’ না লিখতে উইকিলিকসের চিঠি

সংবাদমাধ্যমে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ সম্পর্কে ভুল ও অসত্য তথ্য প্রকাশ বন্ধ করতে ১৪০টি বিষয়ের একটি তালিকা করেছে উইকিলিকস। তালিকাটি পাঠিয়ে তারা অনুরোধ করেছে, যেন এসব বিভ্রান্তিকর তথ্য সংবাদমাধ্যমে প্রচার করা না হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, প্রচার নিষিদ্ধ বিষয়ের মধ্যে রয়েছে, অ্যাসাঞ্জের সঙ্গে রাশিয়ার সংযোগ, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা না রাখা, হ্যাকার আখ্যা দেওয়ার মতো ‘অসত্য।’ উইকিলিকস চায়, এসব ‘অসত্য’ তথ্য প্রচার বন্ধ হোক।s3.reutersmedia.net.htm

বিকল্পধারার সংবাদমাধ্যম উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। বিশ্বজুড়ে ক্ষমতাচক্রের মুখোশ উন্মোচনকারী হিসেবে অনেকের কাছে প্রিয় তিনি। আবার যুক্তরাষ্ট্রের গোপন নথি ফাঁস করার জন্য অনেকেই মনে করেন, তিনি দেশটির নিরাপত্তা বিঘ্নিত করেছেন। তবে শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, অ্যাসাঞ্জের ফাঁস করা নথিতে ইরান থেকে সৌদি আরব, রাশিয়া থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আমাজন পর্যন্ত প্রভাবশালী দেশ ও প্রতিষ্ঠানের তথ্য সাধারণ মানুষের সামনে চলে আসে।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের আশঙ্কায় তিনি যুক্তরাজ্যে অবস্থিত ইকুয়েডরের দূতাবাসে রয়েছেন প্রায় ছয় বছর ধরে। দূতাবাস থেকে বের হলে জামিনের শর্ত ভঙ্গের দায়ে যুক্তরাজ্যের পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারে। তারপর তুলে দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। তিনি ইকুয়েডরে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। এদিকে ইকুয়েডরের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মোরেনো চান না, অ্যাসাঞ্জ আর ইকুয়েডরের দূতাবাসে থাকুন।

ঠিক কি কারণে উইকিলিকস অ্যাসাঞ্জের বিষয়ে ১৪০টি ‘অসত্য’ বক্তব্যের তালিকা তৈরি করে রীতিমতো সংবাদমাধ্যমে ইমেইল পাঠিয়েছে তা নিশ্চিত হতে পারেনি বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তবে উইকিলিকস যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের বিরুদ্ধে আলাদাভাবে অভিযোগ তুলেছে। তাদের দাবি, সংবাদমাধ্যমটি অ্যাসাঞ্জের বিষয়ে ‘ভুয়া খবর’ প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারণা প্রধান পল ম্যানাফোর্টের সঙ্গে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের যোগাযোগ হয়েছে, এমন দাবি করে সংবাদ প্রচার করেছিল গার্ডিয়ান। পরে অ্যাসাঞ্জ ও ম্যানাফোর্ট দুইজনই ওই প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানান।

সংবাদমাধ্যমগুলোকে একটি ইমেইল পাঠিয়ে উইকিলিকসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘উইকিলিকস ও জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের সম্পর্কে ত্রুটিপূর্ণ তথ্য উপস্থাপনের একটা প্রবণতা আছে। আর এ প্রবণতায় বড় বড় এবং নামী-দামি সংবাদমাধ্যমগুলোও আক্রান্ত। সাংবাদিক ও প্রকাশকদের স্পষ্ট দায়িত্ব আছে সতর্কতার সঙ্গে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করার। প্রাথমিক সূত্রের সঙ্গে কথা বলা ছাড়াও তাদের উচিত হবে এই তালিকা থেকে সত্য-মিথ্যা যাচাই করে নেওয়া।’

সংবাদমাধ্যমগুলোকে ১৪০টি আপত্তিকর ‘অসত্যের’ তালিকা দিয়ে উইকিলিকস লিখেছে, ‘এই চিঠি আইনগতভাবে গোপনীয়, যা প্রকাশের জন্য নয়।’ পাঁচ হাজার শব্দের ইমেইলে উইকিলিকসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অ্যাসাঞ্জ কখনও রাশিয়ার গুপ্তচর ছিলেন এমন তথ্য অসত্য। তিনি কোনও দিনও রাশিয়া, ক্রেমলিন বা পুতিনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন না। তিনি কখনও রুশ সরকারের চাকরি করেননি।

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিষয়ে যেসব অসত্য প্রচার না করতে উইকিলিকস ইমেইল পাঠিয়েছে , সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, ‘অ্যাসাঞ্জ চুল ব্লিচ করেন,’ ‘তিনি হ্যাকার,’ ‘তার ব্যক্তিগ্ত পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস কম’ ইত্যাদি।