অর্থপাচারের কালো তালিকায় সৌদি আরব, যুক্তরাজ্যের বিরোধিতা

অর্থপাচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হওয়ায় সৌদি আরবকে কালো তালিকাভুক্ত করতে চায় ইউরোপীয় কমিশন। এ তালিকা আগামী সপ্তাহে প্রকাশের কথা থাকলেও ইতোমধ্যেই এ নিয়ে মতবিরোধ দেখা গেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর মধ্যে। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা মিডিল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, সৌদি আরবকে কালো তালিকাভুক্ত করার বিরোধিতা করেছে যুক্তরাজ্য। সংশ্লিষ্ট অপর কিছু দেশও এমন তালিকায় নাম যুক্ত করার আগে আলোচনার পরামর্শ দিয়েছে।resized_8ea44-1216_eng_picture_20181106_16834948_16834938
নিজেদের অর্থ ব্যবস্থায় কালো টাকার উপস্থিতি বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চাইছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তাছাড়া সন্ত্রাসে অর্থায়ন বন্ধ করতেও কালো টাকার যোগান বন্ধ করতে চায় ইউরোপীয় দেশগুলোর এই সংগঠন। সৌদি আরবসহ ২০টিরও বেশি দেশকে তাই কালো তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
এই তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট দেশগুলো থেকে আসা অর্থের বিষয়ে কড়া যাচাই-বাছাইয়ের বাধ্যবাধকতা তৈরি হবে। ভুয়া লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ পাচার করা হচ্ছে, এমন সন্দেহ হলেই আটকে দেওয়া হবে লেনদেন। এ বিষয়ে তথ্য জানাতে হবে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে।
কিন্তু ব্রাসেলসের এই তালিকায় সৌদি আরবের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। লন্ডন চাইছে না সৌদি আরবকে কালো তালিকাভুক্ত করা হোক। দেশটি দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে মিত্র হিসেবে বিবেচিত। এমন কি মার্কিন সংবাদ মাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাশোগজিকে হত্যার ঘটনায় দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের দিকে আঙুল উঠলেও মিত্রতায় ভাটা পড়েনি।
সৌদি আরবকে কালো তালিকাভুক্ত করার বিরোধিতার ঘটনাটি ঘটেছে গত সপ্তাহে ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতিনিধিদের এক সভায়। সেখানে যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন, ইতালি, বেলজিয়াম এবং গ্রিস আপত্তি জানিয়েছে। যুক্তরাজ্যের ভাষ্য, কমিশনের প্রস্তাবে ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’ হওয়ার উপাদান রয়েছে। লন্ডনকে সমর্থন জানিয়ে বাকিরা বলেছে, এমন তালিকা তৈরির আগে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে আরও বেশি আলোচনা হওয়া দরকার।
জবাবে ব্রাসেলসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অর্থ পাচার রোধে ব্যর্থতার দায়ে কালো তালিকাভুক্ত করার বিষয়ে এখন যারা আপত্তি জানাচ্ছেন তারা অনেক আগে থেকেই এ বিষয়ে জানতেন। কিন্তু এখন সৌদি আরবের নাম যুক্ত হতে দেখে তারা আপত্তি জানাতে শুরু করেছেন।
তালিকা প্রণয়ন হয়ে গেলে এর বিরুদ্ধে ভোট আহ্বান করা যেতে পারে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে। ৩০ দিনের মধ্যে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হতে হবে। তারা তালিকার বিরুদ্ধে ভোট দিলে, তালিকা বাতিল হয়ে যাবে। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একবার তালিকায় প্রকাশিত হয়ে গেলে কালো টাকার কালো তালিকা বাতিলের বিষয়ে ভোটাভুটি আহ্বানের সম্ভাবনা খুবই কম।