শ্বেত ভালুকের হামলায় জরুরি অবস্থা জারি

রাশিয়ার একটি দ্বীপে শ্বেত ভালুকের হামলায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে গত শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি)। কয়েক ডজন ভালুক দ্বীপটিতে ঢুকে পড়ে মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছে। তাদেরকে আবাসিক ভবনের ভেতরেও ঢুকে পড়তে দেখা গেছে। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, কয়েক হাজার মানুষের বসতি ওই দ্বীপটিতে। বৈশ্বিক উষ্ণায়ণের কারণে উত্তর মেরু বিন্দুতে জমা থাকা বরফ দ্রুত রাশিয়ার দিকে সরে যেতে থাকায় মেরু ভালুক শিকারের জন্য আরও উত্তরের দিকে যেতে শুরু করেছে।9376388-3x2-700x467

রাশিয়ার সংশ্লিষ্ট দ্বীপটির নাম নোভায়া জেমায়া। দ্বীপের বাসিন্দা তিন হাজারের মতো। কয়েক ডজন শ্বেত ভালুক দ্বীপটিতে ঢুকে পড়েছে। এ বিষয়ে সহায়তা চাওয়া হয়েছে রাশিয়ার কাছে। রাশিয়া ভালুকগুলোকে হত্যার অনুমতি দেয়নি। তবে পরিস্থিতির মূল্যায়নে টাস্কফোর্স পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বৈশ্বিক উষ্ণায়ণের কারণে শ্বেত ভালুকের ওপরও প্রভাব পড়েছে। দ্রুত বরফ গলে যেতে থাকায় এদেরকে এখন ভূমিতে অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে, যেখানে তারা খাদ্যের জন্য উপস্থিত হয়। রাশিয়া শ্বেত ভালুককে বিপন্ন প্রজাতির প্রাণি হিসেবে গণ্য করে। শ্বেত ভালুক হত্যা নিষিদ্ধ রাশিয়ায়।

নোভায়া জেমায়াতে রাশিয়ার বিমান বাহিনীর ঘাঁটি রয়েছে। গত ডিসেম্বর মাস থেকে দ্বীপটির মূল মানব বসতি বেলুসিয়া গুবাতে ৫২টি শ্বেত ভালুককে যেতে দেখা গেছে। স্থানীয় একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এসব ভালুকের মধ্যে আগ্রাসী আচরণ রয়েছে।

আরেকজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন , ভালুকগুলো বিভিন্ন ভবনের ভেতরে ঢুকে গেছে এবং মানুষের ওপর হামলা চালানোর মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। এখন বসতি এলাকায় ছয় থেকে দশটি ভালুক ঘোরাঘুরি করছে। এতে বাসিন্দারা ভীত হয়ে পড়েছেন। ঘরের বাইরে বের হতে ঝুঁকি অনুভব করছেন। বাবা-মায়েরা স্কুলে পাঠাচ্ছেন না তাদের ছেলে-মেয়েদের।

ভালুকগুলোকে ভয় দেখানোর জন্য গাড়ি নিয়ে তাদের তাড়া করা বা কুকুর লেলিয়ে দেওয়ার মতো পদ্ধতি আর কাজ করছে না। ভালুকগুলো এখন আর এসবে ভয় পায় না। বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে সবচেয়ে আগ্রাসী ভালুকগুলোকে গুলি করে হত্যার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাশিয়ার ‘ফেডারেল এনভায়রনমেন্ট রিসোর্স এজেন্সি’ তার অনুমতি দেয়নি।

স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় সরকারের কয়েকজন কর্মকর্তাকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা দ্বীপপুঞ্জের অবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শন করতে যাবেন। শেষ পর্যন্ত যদি কোনওভাবে ভালুকগুলোকে সরিয়ে দেওয়া না যায় তাহলে তাদের গুলি করে হত্যাই করা হতে পারে।

গত জানুয়ারি মাসে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, নোভায়া জেমায়াতে সামরিক বাহিনীর অব্যবহৃত অনেকগুলো স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়েছে। কারণ সেসব স্থাপনায় আশ্রয় নেওয়া শুরু করেছিল শ্বেত ভালুকেরা।