তুর্কি সশস্ত্র বাহিনীর আরও ২৯৫ জনকে গ্রেফতারের আদেশ

২০১৬ সালে এরদোয়ান বিরোধী অভ্যুত্থানে যুক্ত থাকার অভিযোগে আরও ২৯৫ জনকে গ্রেফতারের আদেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। এসব সদস্যদের বেশিরভাগই সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত, যাদের মধ্যে রয়েছেন কর্নেল, লেফটেন্যান্ট ও মেজর পদমর্যাদার কর্মকর্তারাও। সংশ্লিষ্টদের প্রায় অর্ধেক সেনাবাহিনীর সদস্য। বাকিরা নৌ বাহিনী ও বিমান বাহিনীতে কর্মরত। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তুরস্ক সরকার সংশ্লিষ্টদের যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছানির্বাসনে থাকা আধ্যাত্মিক নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনের অনুসারী বলে মনে করে।FDE17819-038F-4E19-B9CA-D01061568220_w1023_r1_s
২০১৬ সালের ১৫ জুলাই তুর্কি সেনাবাহিনীর একাংশ অভ্যুত্থান ঘটায়। তুরস্কের ডানপন্থী সরকারকে উচ্ছেদের দাবি করে শাসনভার নিজেদের হাতে তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেয় তারা। শেষ পর্যন্ত সামরিক বাহিনীর সব অংশের সমর্থন না থাকায় এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের তৎপরতায় জনগণ রাস্তায় আসে। এতে বিদ্রোহী সেনা সদস্যদের উদ্যোগ ভেস্তে যায়। এরপর আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। শুরু হয় ব্যাপক ধরপাকড়। এখন পর্যন্ত ৭৭ হাজারেরও বেশি মানুষকে বিনা বিচারে জেলে আটকে রাখা হয়েছে। সেনা সদস্যসহ দেড় লাখেরও বেশি মানুষকে করা হয়েছে চাকরিচ্যুত।
শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) তুরস্ক সরকার ২৯৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে আটকের আদেশ দিয়েছে।  এদের মধ্যে রয়েছেন চার জন কর্নেল, পাঁচ জন লেফটেন্যান্ট কর্নেল ও ১০ জন মেজর। ২৯৫ জনের অর্ধেকই সার্জেন্ট পদমর্যাদার।  বিকালের মধ্যে ১৫০ জনকে আটকের কথা নিশ্চিত করেছে ইস্তানবুল পুলিশ।
তুরস্কের সরকার সমর্থক বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, অভ্যুত্থানের সময় পাবলিক টেলিফোনে হওয়া কথোপকথনের বিষয়ে তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। দেশটির সংবাদপত্র হুররিয়াত জানিয়েছে, অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান শুরু হয় দিবাগত রাত ১টায়।
সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের পাশাপাশি এমন ৪৮ জনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ইস্তানবুল পুলিশ যারা সমরাস্ত্র নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। পাবলিক ফোনের কথোপকথনের ভিত্তিতে হওয়া তদন্তের ভিত্তিতে তাদেরকেও গুলেন সমর্থক হিসেবে গণ্য করছে এরদোয়ান সরকার।
২০১৬ সালের ব্যর্থ অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার অভিযোগে ৭৭ হাজারেরও বেশি ব্যক্তিকে আটক করে কারাগারে রাখা হয়েছে। গত মাসে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ও সাবেক সেনাপ্রধান হুলুসি আকার সংসদে জানিয়েছেন, ফেতুল্লাহ গুলেনের সমর্থক হওয়া ও তার আদেশে অভ্যুত্থানে জড়িত হওয়ার অভিযোগে সেনাবাহিনীর ১৫ হাজার সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৫০ জন জেনারেল ও অ্যাডমিরাল পদমর্যাদার কর্মকর্তা।