করোনার ‘কেন্দ্রস্থল’ এখন ইউরোপ: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নতুন নতুন দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার পর এই সংক্রমণকে বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে ঘোষণার পর এবার ইউরোপকে এই মহামারীর কেন্দ্রস্থল হিসেবে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেডরোস গেব্রিউস বলেছেন, বর্তমানে এই মহামারীর কেন্দ্রস্থল হয়ে পড়েছে ইউরোপ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে।

europe-now-epicentre-of-coronavirus-pandemic-who

ইউরোপের কয়েকটি দেশে করোনা ভাইরাসে নতুন করে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান এই ঘোষণা দিয়েছেন। ইতালিতে শুক্রবার ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ২৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে করে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৬৬ জনে। আর মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ হাজার ৬৬০ জন।

ইতালির পর স্পেনে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার মৃতের সংখ্যা সেখানে দ্বিগুণ হয়ে ১২৯ জন হয়েছে এবং আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ২৩১ জনে। শনিবার থেকে রাষ্ট্রীয় সতর্কতা শুরু হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী পেড্রো সানচেজ।

ভাইরাসটির বিস্তার রোধ করতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সীমান্তে বিধিনিষেধ জোরদার করা হয়েছে। স্পেন, ইতালি ছাড়া ফ্রান্সে ২ হাজার ৮৭৬ জন আক্রান্ত ও ৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। জার্মানিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৬২ ও মৃত্যু হয়েছে ৫ জনে। যুক্তরাজ্যে ১১ জনের মৃত্যু ও ৭৯৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশ সময় শনিবার সকাল সাড়ে দশটা পর্যন্ত ইউরোপসহ বিশ্বে এখন পর্যন্ত  ১৪৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে করোনা ভাইরাস। আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৮১০ জন মানুষ। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৭২ হাজার ৫৩১ জন। তবে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়ে শুক্রবার (১৩ মার্চ) রাত পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে ৫ হাজার ৪৩৬ জন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেডরোস গেব্রিউস বলেন, ইউরোপ এখন মহামারীর উৎসস্থলে পরিণত হয়েছে। চীন বাদে সব আক্রান্ত দেশের তুলনায় নতুন করে আক্রান্ত হওয়া ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে ইউরোপে। এমনকি চীন থেকেও বেশি হারে এখন ইউরোপে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের ঘটনা ঘটছে।

টেডরোস বলেন, নির্দিষ্ট দেশে কোনও মহামারী বা রোগের ভয়াবহ রূপ দেখলেও অনেক সময় মনে করা হয় আরেকটি দেশে সেটি হওয়ার আশঙ্কা নেই। এমন ভাবনাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। বিশ্বের প্রতিটি দেশেরই এখন উচিত ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা ভাইরাস আক্রান্তকে খুঁজে বের করা, সঠিক চিকিৎসা করা।

কোভিড-১৯ রোগে ৫ হাজারের বেশি মৃত্যুর ঘটনাকে দুঃখজনক মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেছেন টেডরোস।