চীনা চিকিৎসা সামগ্রী ফিরিয়ে দিচ্ছে কয়েকটি দেশ

করোনাভাইরাস মহামারি ঠেকাতে চীনের উৎপাদিত কিছু চিকিৎসা সামগ্রী ফিরিয়ে দিচ্ছে কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ। স্পেন, তুরস্ক ও নেদারল্যান্ডসের কর্মকর্তারা বলছেন, চীনের পাঠানো কোভিড-১৯ পরীক্ষার কয়েক লাখ কিট ও মেডিক্যাল মাস্ক মান সম্পন্ন না অথবা ত্রুটিপূর্ণ। সোমবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

nnnnn
ইউরোপে কয়েক লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে শুধু ইতালিতেই মৃত্যু হয়েছে দশ হাজারের বেশি মানুষের। মৃতের হিসাবে তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে স্পেন। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা সাত হাজার ৩৪০। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৫ হাজার ১৯৫। ভাইরাসটি ২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনে প্রথম শনাক্ত করা হয়। এরপরই চীনা সরকার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।
শনিবার নেদারল্যান্ডসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, তারা যে ৬ লাখ ফেস মাস্ক বিতরণ করেছিল সেগুলো ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। এই মাস্কগুলো ২১ মার্চ দেশটিতে পৌঁছায় এবং এগুলো একটি চীনা কোম্পানি তৈরি করেছে।
ডার্চ কর্মকর্তারা বলছেন, এই মাস্কগুলো মুখে ঠিকমতো পরা যাচ্ছে না এবং এর ফিল্টার যেমন কাজ করার কথা ছিল তা করছে না। যদিও মাস্কগুলো মানসম্পন্ন বলে সনদ পেয়েছে।
এক বিবৃতিতে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, আরও যেসব চালান আসার কথা ছিল সেগুলো স্থগিত করা হয়েছে এবং যা মজুদ আছে তা বিতরণ করা হচ্ছে না। এখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এগুলো আর ব্যবহার করা হবে না।
চীনা কোম্পানির কাছ থেকে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার কিট আমদানি করে একই সমস্যায় পড়েছে। দেশটি জানিয়েছিল, ভাইরাসের বিস্তার রোধে কয়েক লাখ কিট কেনা হচ্ছে। কিন্তু কয়েকদিন পর তারা জানায়, এগুলোর মধ্যে অন্তত ৬০ হাজার কিট সঠিকভাবে রোগীর দেহে ভাইরাস রয়েছে কিনা তা শনাক্ত করতে পারেনি।
চীনে নিযুক্ত স্পেন দূতাবাস টুইটারে জানিয়েছে, চীনের মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এসব কিট বিক্রির জন্য সরকারি অনুমোদন পায়নি নির্মাতা শেনজেন বায়োইজি বায়োটেকনোলজি। তবে টুইটারে দূতাবাস জানিয়েছে, চীনা সরকার ও আলিবাবা গ্রুপ যেসব কিট সরবরাহ করেছে সেগুলোর মধ্যে শেনজেন বায়োইজির কোনও পণ্য ছিল না।
তুরস্কও জানিয়েছে চীন থেকে আমদানি করা কিছু কিট সঠিকভাবে ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করতে পারছে না। যদিও দেশটি বলছে তাদের ব্যবহৃত সাড়ে তিন লাখ কিট যথাযথভাবে কাজ করেছে।
বিবিসি'র খবরে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের বিস্তারকে কেন্দ্র করে চীন নিজের প্রভাব বাড়াতে চাইছে, এমন সমালোচনার মধ্যেই ত্রুটিপূর্ণ চিকিৎসা সামগ্রীর কথা সামনে আসছে। গত সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রধান কূটনীতিক জোসেপ বোরেল এক ব্লগ পোস্টে চীনের প্রভাব বৃদ্ধির বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন।