ফ্রান্সে শিক্ষককে গলা কেটে হত্যায় গ্রেফতার ৯

ফ্রান্সে এক শিক্ষককে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শিক্ষককে হত্যাকারী তরুণ জঙ্গিবাদ সমর্থক পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, হামলাকারী একাই ছিল, নাকি এর পেছনে আরও অনেকে জড়িত- তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই এই নয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে এখবর জানিয়েছে।

55306177_303

শুক্রবার কনফা-সাঁত-ওনোরিন এলাকায় বড় আকারের একটি ছুরি হাতে ওই শিক্ষকের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে। এরপর আক্রমণকারী পালানোর চেষ্টা করে। স্থানীয়রা পুলিশকে জানালে তারা দ্রত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ সদস্যরা এরাগনি এলাকায় হামলাকারীকে আটকাতে সক্ষম হয়। সেসময় পুলিশ চিৎকার করে হামলাকারীকে আত্মসমর্পণ করতে বলে, কিন্তু হামলাকারী উল্টো পুলিশকে হুমকি দেয়। এ পর্যায়ে পুলিশ হামলাকারীকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই সে মারা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আততায়ী ‘আল্লাহু আকবর' বলে হামলা চালায়। হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তি কলেজের ইতিহাসের শিক্ষক। এই মাসের প্রথমদিনে তিনি তার মত প্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ক ক্লাসে মহানবী হজরত মোহাম্মদের কার্টুন দেখিয়েছিলেন শিক্ষার্থীদের। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ এই ঘটনাকে ‘ইসলামি সন্ত্রাসবাদ' হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

ঘটনার পরপরই হামলাকারীর চার আত্মীয়কে আটক করেছে পুলিশ, এর মধ্যে এক শিশুও আছে। এরপর রাতভর অভিযান চালিয়ে আরও পাঁচজনকে আটক করে পুলিশ। এদের মধ্যে দ্যু বয়েস ডি অলনে কলেজের দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক রয়েছেন।

ফ্রান্সের মুসলিম নেতারা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ফ্রান্সের ধর্মনিরপেক্ষ নীতি, মত প্রকাশের স্বাধীনতায় আঘাত হেনেছে এটি।

বোর্দো মসজিদের ইমাম তারেক ওব্রু বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা কোন সভ্য মানুষ করতে পারে না, এটি বর্বরদের কাজ।’

ইসলামি জঙ্গিরা এবং তাদের মতাদর্শকে যারা মেনে চলে, সেই সব মানুষ ফ্রান্সের মুসলিম সম্প্রদায়ের ভাবমূর্তিকে ধ্বংস করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তারেক আরও বলেন, যেসব দিনে হামলা হয় না, আমরা আল্লাহকে ধন্যবাদ জানাই। এই ধরনের ঘটনা সমাজ, শান্তি এবং ধর্ম, যা আমাদের একত্রিত করে, তার উপর হামলা।