ব্রিটেনে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পাবেন অবৈধ অভিবাসীরা

ব্রিটেনে অবৈধভাবে বসবাসরত প্রায় ১৩ লাখ মানুষ ধরপাকড়ের কোনও ঝুঁকি ছাড়াই করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে পারবেন। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকার জিপিতে বা ডাক্তারের কাছে নিবন্ধিত না হওয়া লোকদের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্যে কাজ করছে। ফলে অবৈধ অভিবাসীরাও ভ‌্যাক‌সিন নেওয়ার জন‌্য নিবন্ধন করতে পারবেন। ভ্যাকসিন নিতে গেলে কারও অভিবাসনের অবস্থা যাচাই করা হবে না এবং ধরাপাকড়ের আশঙ্কা নেই।  

মহামারি শুরুর পর করোনাভাইরাসের পরীক্ষার ক্ষেত্রে অভিবাসন অবস্থা যাচাই না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার। যাতে করে সবাই করোনা পরীক্ষা করাতে পারেন। এবার ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও একই নীতি গ্রহণ করা হলো। তবে এই নীতি অভিবাসীদের জন্য ক্ষমা ঘোষণা নয় এবং ভ্যাকসিন নেওয়ার ফলে কাউকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে না।

সরকারের একজন মুখপাত্র বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘অভিবাসন অবস্থা নির্বিশেষে যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী প্রত্যেককে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে। জিপিতে নিবন্ধিত ব্যক্তিদের প্রাথমিক পর্যায়ে যোগাযোগ করা হচ্ছে। যারা জিপিতে নিবন্ধনভুক্ত নন তাদেরকেও এই ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য অংশীদার এবং বাইরের সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি।

যুক্তরাজ্যে অবৈধ অভিবাসীর নির্দিষ্ট সংখ্যা নিয়ে সরকারি কোনও তথ্য নেই। ন্যাশনাল অডিট অফিস (এনএও) গত বছর যে তালিকা প্রকাশ করেছে তাতে দেখা গেছে গত ১৫ বছরে বৈধ কাগজপত্র না থাকা অভিবাসীদের সংখ্যা হালনাগাদ করা হয়নি। তাই এটি স্পষ্ট নয়, এই ঘোষণায় কত মানুষের ওপর প্রভাব ফেলবে।

সর্বশেষ সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী যুক্তরাজ্যে অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ ৩০ হাজার। কিন্তু এই তথ্য ২০০৫ সালে প্রকাশ করা হয়েছিল।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের গবেষণায় অনুমান করা হয়েছে, ২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যে ৮ থেকে ১২ লাখ ‘অননুমোদিত অভিবাসী’ ছিল।  অপর একটি গবেষণায় ধারণা করা হয়েছে, অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা ১২ থেকে ১৩ লাখের মধ্যে হতে পারে।

অবৈধ অভিবাসীদের ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার তালিকার কোনও শ্রেণিতে রাখা হবে তাও স্পষ্ট নয়। কারণ নিবন্ধন না থাকায় তাদের বয়স সম্পর্কেও কর্তৃপক্ষের ধারণা নেই। মানবাধিকার ও দাতব্য সংস্থাগুলো আশঙ্কা করছে, এই শ্রেণির অভিবাসীদের অনেকের বয়স কম হলেও তারা স্বাস্থ্যগতভাবে দুর্বল এবং স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার সুযোগ সীমিত। ফলে করোনা পরিস্থিতি তাদেরকে আরও ঝুঁকিতে ফেলেছে।

যুক্তরাজ্যে ১ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন। ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সরকার অগ্রাধিকার তালিকার প্রথম চার শ্রেণির দেড় কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।