ভ্যাকসিন প্রয়োগে ব্যর্থতা স্বীকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কর্মসূচিতে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছেন। বুধবার তিনি বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) দেরিতে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন অনুমোদন দিয়েছে এবং এই মুহূর্তে যেখানে থাকার কথা তাদের সেখানে পৌঁছাতে পারেননি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট স্বীকার করেছেন, ভ্যাকসিন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে তাদের আত্মবিশ্বাস অতিরিক্ত ছিল।

ইইউ ব্লকে ভ্যাকসিন প্রয়োগে ধীরগতির কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছে কমিশন প্রধান। যুক্তরাজ্যের চেয়ে ভ্যাকসিন প্রয়োগে পিছিয়ে থাকায় ক্ষোভ ছড়াচ্ছে। এরই মধ্যে ব্রিটেনে ১ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু ইউরোপীয় কমিশন প্রেসিডেন্ট সদস্য রাষ্ট্রগুলোর পক্ষ থেকে ভ্যাকসিন কেনার অর্ডার দেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, এটি সঠিক সিদ্ধান্ত।

উৎপাদন জটিলতায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনকা ও ফাইজার-বায়োএনটেক ইউরোপীয় কয়েকটি অর্ডার স্থগিত করেছে। এতে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। যদিও সম্প্রতি দুই ভ্যাকসিন উৎপাদনকারীদের পক্ষ থেকে ডোজের সংখ্যা সরবরাহের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ইউরোপে ভ্যাকসিন সরবরাহে অ্যাস্ট্রাজেনকা জার্মান কোম্পানি আইডিটি বায়োলজিকার সঙ্গে চুক্তিও করেছে।

এই প্রথম ভন ডার লিয়েন প্রকাশ্যে সমালোচনা মেনে নিলেন। গত সপ্তাহে তিনি জার্মান একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, একটি দেশ নিজের স্পিডবোট হতে পারে। কিন্তু ইইউ একটি ট্যাংকের মতো।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টকে লিয়েন বলেন, অনুমোদনে আমরা পিছিয়ে ছিলাম। ব্যাপক উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমরা ছিলাম উচ্চাভিলাষী। হয়ত নির্দিষ্ট সময়ে অর্ডার সরবরাহের বিষয়ে আমরা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী ছিলাম।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, কোথায় ত্রুটি হয়েছে তা চিহ্নিত করা হবে।

অবশ্য কমিশন প্রধান মহামারি মোকাবিলায় ইইউ’র যৌথ পদক্ষেপকে সঠিক বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, আমি কল্পনাও করতে পারি না যে কয়েকটি বড় দেশ দ্রুত পেয়ে গেছে এবং বাকিরা খালি হাতে বসে আছে। অর্থনীতির নিরিখে এটি বোকামি এবং আমি মনে করি এটি আমাদের ঐক্যবদ্ধতার ইতি হতে পারত।

ভ্যাকসিন অনুমোদনে সময় নেওয়ার পক্ষেও যুক্তি তুলে ধরেন তিনি। তার কথায়, এই বিলম্ব ছিল আত্মবিশ্বাস ও নিরাপত্তা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ।