বছরে ১০০ কোটি টন খাবার অপচয় করছে মানুষ

প্রতি বছর মানুষ প্রায় ১০০ কোটি টন খাবার অপচয় করছে। জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। এখন পর্যন্ত এটিই সবচেয়ে বিস্তৃত পর্যালোচনা এবং পূর্বাভাসের চেয়ে খাবার অপচয়ের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এখবর জানিয়েছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বজুড়ে বাড়িতে একজন ব্যক্তির বছরে খাবার অপচয়ের পরিমাণ গড়ে ৭৪ কেজি। যুক্তরাজ্যের প্রতিটি বাড়িতে অপচয় করা হয় প্রতি সপ্তাহে আট বেলার খাবার।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মোট খাবার অপচয়ের ১৭ শতাংশ হয় রেস্তোরাঁ ও দোকানে। কিছু খাবার নষ্ট হয় কারখানা ও সাপ্লাই চেইনে। এর অর্থ হলো মোট খাবারের এক-তৃতীয়াংশ কখনও খাওয়াই হয় না।

খাবারের অপচয়ের ফলে কয়েকশ’ কোটি ক্ষুধার্ত বা স্বাস্থ্য সম্মত খাবার না পাওয়া মানুষদের সহযোগিতার উদ্যোগকে ব্যাহত করে। শুধু তাই নয়, এতে পরিবেশের ক্ষতিও হয়। খাবারের অপচয় ও নষ্ট কার্বন নির্গমনে ভূমিকা রাখে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি খাবারের অপচয় একটি দেশ হতো তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পর তৃতীয় সর্বোচ্চ কার্বন নির্গমনকারী দেশ হতো। কিন্তু গবেষকরা বলছেন, খাবারের অপচয় কমিয়ে আনা মানুষের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমিয়ে আনার সবচেয়ে সহজ সুযোগ। এরপরও এই সুযোগে দুর্ভাগ্যজনকভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে না।

সাধারণভাবে মনে করা হয়, খাবারের অপচয় সমস্যা ধনী দেশগুলোতে বেশি প্রভাব ফেলছে। কিন্তু জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অবাক করার মতো বিষয় হলেঅ সব দেশেই পরিস্থিতি প্রায় একই রকম। দরিদ্র দেশগুলোর তথ্য আতঙ্কজনক।

গবেষকরা বলছেন, কোনও মানুষই ফেলে দেওয়ার জন্য কিনে না। প্রতি দিন অল্প করে খাবারের অপচয় তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে হয় না। ফলে খাবারের অপচয় রোধে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধিই মূল চাবিকাঠি। এক্ষেত্রে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ অপচয়কৃত খাবার সংগ্রহও করতে পারে।

তারা আরও বলছেন, সরকার ও বড় কোম্পানির পদক্ষেপ প্রয়োজন কিন্তু ব্যক্তিগত উদ্যোগও গুরুত্বপূর্ণ।