মহামারিতে ধনীদের সম্পত্তি বেড়েছে ৫ লাখ কোটি ডলার: জাতিসংঘ মহাসচিব

একদিকে যখন করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে নেমে এসেছে অর্থনৈতিক সংকট, তখন দুনিয়ার ধনকুবেরদের একাংশের সম্পত্তি বেড়েছে। সোমবার পাঁচ লাখ কোটি ডলার মুনাফার প্রমাণসহ এই দাবি করেছেন খোদ জাতিসংঘের মহাসচিব আন্থোনিও গুতেরেস। একই সঙ্গে প্রস্তাব দিয়েছেন, পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। করোনার সংক্রমণ নতুন করে বাড়ছে। তাই মহামারিতে ভুক্তভোগী দেশগুলোর মধ্যে যারা মুনাফা অর্জন করেছেন তাদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ কর কাটা উচিত। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এখবর জানিয়েছে।

করোনার সংক্রমণ ও তা ঠেকাতে জারি করা লকডাউনের জোড়া ধাক্কায় গত বছর থেকে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা নেমে আসে। কাজ হারায় অসংখ্য মানুষ। ছোট-বড় অনেক সংস্থাই বন্ধ হয়ে যায়। প্রথম বিশ্ব থেকে তৃতীয় বিশ্ব। এটি সার্বিক পরিস্থিতির একদিকের ছবি। আর এর ঠিক উলটো দিকজুড়ে রয়েছে অন্য বাস্তবতা।

জাতিসংঘ মহাসচিবের দাবি, এই করোনার প্রভাব সমাজের সর্বস্তরে পড়েছে, এমনটা নয়৷ বরং, ধনকুবেরদের একটা বড় অংশ এই দুর্দিনেও বহাল তবিয়তে লাভের মুখ দেখেছেন।

আর্থিক ধাক্কা তো দূরের কথা, মহাসচিবের দাবি, লকডাউনের মধ্যেও তাদের সম্পত্তি হু হু করে বেড়েছে। আর সেই অংকটাও চোখ কপালে তোলার মতো—প্রায় ৫ লাখ কোটি ডলার।

তিনি প্রস্তাব দিয়েছেন, ‘বিশ্বব্যাপী মহামারীর সময় মুনাফা বাড়িয়েছেন যারা, সব সরকারের উচিত তাদের চিহ্নিত করা। এই ঘটনা সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক বৈষম্যকে আরও তীব্র করেছে। এই পরিস্থিতিতে তাদের থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পত্তি কর কেটে নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।’

করোনা সমাজের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে এবং নতুন করে সাজাতে আর্থিক পুনর্বিন্যাস জরুরি বলেও মন্তব্য করেন গুতেরেস। জাতিসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল ফোরামের মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন নতুন সমাজব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময়। যার ভিত্তি হবে শিক্ষার মানোন্নয়ন, সহানুভূতি, কর্মসংস্থান, সামাজিক সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যের উন্নতি। এটিই স্থিতিশীল সমাজের মূল কথা।’

যদিও সম্পত্তি করবিষয়ক বিতর্ক নতুন নয়। আর্থিক বৈষম্য দূর করতে এবং দেনার দায়ে ধুঁকতে থাকা দেশগুলোকে চাঙ্গা করতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় এ নিয়ে অনেক দিন ধরে আলোচনা চলছে। মার্কিন সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্টিগলিৎজ এবং টমাস পিকেট্টি এই নতুন নিয়ম জারি করার সপক্ষে টানা কথা বলে যাচ্ছেন।