অস্ট্রেলিয়ায় ইঁদুরের উপদ্রব, বিষ প্রয়োগের পরিকল্পনা

অস্ট্রেলিয়ার বিশাল এলাকা জুড়ে ইঁদুরের উপদ্রব দেখা দিয়েছে।  ফসলের মাঠ আর বাড়িঘরে লাখ লাখ ইঁদুর ঠেকাতে বিষ প্রয়োগের পরিকল্পনা করছে নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য। দেশটির ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী এই সপ্তাহে বলেছেন, ভালো ইঁদুর কেবল মৃত ইঁদুর। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন’র প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

গত কয়েক মাস ধরেই অস্ট্রেলিয়ার পূর্বাঞ্চল জুড়ে ইঁদুরের উপদ্রব বেড়েছে। ভিক্টরিয়া সীমান্ত থেকে শুরু করে দক্ষিণ পর্যন্ত পুরো এলাকায় ফসলের মাঠ আর বাড়ির অভ্যন্তরে ইঁদুরের বিচরণে লাখ লাখ ডলারের ক্ষতি হচ্ছে।

শীত আসতে থাকায় ক্ষুধার্ত ইঁদুরগুলো মানুষের বাড়ির অভ্যন্তরে আশ্রয় নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রফেশনাল ক্লিনার সুয়ে হজ। সিডনি থেকে চার-পাঁচ ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত ছোট শহর কানোউন্দ্রায় হজ ক্লায়েন্টদের বাড়িতে ফঁদে পড়ে মারা যাওয়া ইঁদুর পরিষ্কার করে দিন পার করেন। তিনি মানুষের রান্নাঘর, শিশুদের ঘর এমনকি তাদের বিছানা থেকে ইঁদুর পরিষ্কার করেন।

নিজের বাড়িতে ইঁদুর প্রবেশ ঠেকাতে প্রতিটি ছিদ্র বন্ধ করে দিয়েছেন সুয়ে হজ। তিনি ফাঁদ পেতে ইঁদুর ধরেন। তবে নিউ সাউথ ওয়েলস সরকার আরও দ্রুত এবং শক্তিশালী কিছুর সন্ধান করছে। বৃহস্পতিবার কর্মকর্তারা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ইঁদুর মারার রাসায়নিকের পাঁচ হাজার লিটার কেনা নিশ্চিত করেছেন। তবে এই সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারেনি সব নাগরিক। অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করছেন ইঁদুর মারতে বিষ প্রয়োগ করা হলে তা স্থানীয় বণ্যপ্রাণীকে আক্রান্ত করতে পারে।

বিগত কয়েক বছরের মধ্যে নিউ সাউথ ওয়েলসে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে ২০২০ সালে। ফলে ফসল উৎপাদিত হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ। বৃষ্টি এবং রেকর্ড পরিমাণ ফসলের কারণে ইঁদুরের আদর্শ পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কানোউন্দ্রার কৃষক মাইকেল পাইতেন বলেন, আমরা প্রচুর শস্য জমা করে রেখেছি আর সেগুলো ইঁদুরের হোটেলে পরিণত হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল সাইন্স এজেন্সির (সিএসআইআরও) হিসেব অনুযায়ী প্রতি হেক্টরে আটশ’ থেকে এক হাজার ইঁদুর হলে তাকে বিরক্তিকর বলে বিবেচনা করা হয়। তবে সিএসআইআরও বলছে, এবারে ইঁদুরের পরিমাণ আকাশের তারার সমান হয়ে গেছে। একটি ইঁদুর এক মৌসুমে পাঁচশ’ বাচ্চা জন্ম দিতে পারে। আর সব বাচ্চারই খাবার প্রয়োজন।