১২৩ দিন হাতকড়া পরেও টিকলো না সম্পর্ক

ইউক্রেনের বাসিন্দা আলেকজান্ডার কুডলে এবং ভিক্টোরিয়া পুস্তোভিটোভা। দাম্পত্য জীবন ডানা মেলেনি। কিন্তু তার আগে প্রেম জীবনেই যে হাজারও অশান্তি, খিটিমিটি লেগে রয়েছে! বাজার করা থেকে শুরু করে ঘুমোনোর সময়; কোত্থাও শান্তি নেই।

তাই যৌথ জীবনে শান্তি ফেরাতে অদ্ভুত উপায় বেছে নিয়েছিলেন তারা। একে অন্যের হাতে পরিয়ে দিয়েছিলেন বাঁধন। তবে সেই বাঁধন প্রেমের নয়, চেইনের। হ্যাঁ, হাতকড়া পরেই একে অন্যের পিছু পিছু ঘুরেছেন… একদিন, দুই দিন নয়… পাক্কা ১২৩ দিন। বাথরুমে যাওয়া থেকে শুরু করে ভ্যাকসিনেশন— কোভিডের উথাল-পাথাল সময়েও একে অন্যের ‘হাত’ আক্ষরিক অর্থেই ছাড়েননি তারা। ‘আউট অব সাইট, আউট অব মাইন্ড’ প্রবাদের নিহিত অর্থটুকু মনেপ্রাণে গ্রহণ করেছিলেন উভয়েই।

জীবনের অঙ্ক অবশ্য বড্ড গোলমেলে। এখানে কোনও প্রবচনের নিদান খাটে না। তাই ১২৩ দিন পর ‘হাতকড়ামুক্ত’ হয়ে সম্পর্ক থেকেও মুক্তি চেয়েছেন তারা। কিয়েভের রাজপথে রীতিমতো ঘটা করে সাংবাদিক ডেকে হ্যান্ডকাফ কাটার আয়োজন করা হয়। ব্রেকআপের পর তার ছবি জয়েন্ট ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্টও করেছেন ওই যুগল। যা ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে!

বছর ৩৩-এর আলেকজান্ডার পেশায় অনলাইন গাড়ি বিক্রেতা। অন্যদিকে ২৯ বছরের ভিক্টোরিয়া বিউটিশিয়ানের কাজ করেন। ২০২১ সালের ভ্যালেন্টাইন্স ডে উদযাপন করতে ইউক্রেনের খারকিভ এলাকার এই যুগল পরস্পরকে হাতকড়া পরানোর সিদ্ধান্ত নেন। কথায় কথায় ব্রেকআপ আর রোজকার ঝামেলায় বিরক্ত হয়েই এমন এক্সপেরিমেন্ট তাদের।

নতুন এই পরিকল্পনা একেবারে শুরুর দিকেই মুখ থুবড়ে পড়ে। পরস্পরের ব্যক্তিগত জীবনে আরও বেশি করে নাক গলানো শুরু হয়। আলেকজান্ডারের কথামতো কাজ করতে রাজি ছিলেন না ভিক্টোরিয়া। সবমিলিয়ে পুরোনো জীবনে ফিরে যাওয়ার জন্য তিনি অনবরত তাগাদা দিতে থাকেন। যার জেরে এই হ্যান্ডকাফ বা হাতকড়ার বন্ধন থেকে মুক্তি।

কিয়েভের রোদেলা রাজপথে হাতকড়া কেটে আলাদা হওয়ার পর স্বাধীনতার স্বাদ পেয়ে উচ্ছ্বসিত ভিক্টোরিয়া। ‘ইয়াহু’ বলে আনন্দ প্রকাশের পর তিনি বলেন, ‘সবাইকে অনেক ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য। আমরা খুশি। আর এই অভিজ্ঞতা আমরা দুই জনই খুব উপভোগ করেছি। এখন থেকে আমরা আলাদাভাবে, স্বাধীনভাবে বাঁচবো।’

এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, যারা সম্পর্ক দীর্ঘজীবী করতে চান, তাদের এই ঘটনা সম্পর্কে জানা উচিত। যত মুঠো শক্ত করে ধরতে যাবেন, তত আঙুলের ফাঁক দিয়ে বাইরে বেরিয়ে যাবে সবটা। মুঠো আলগা করুন। ভালোবাসার মানুষ থাকার হলে এমনিই থাকবে। বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। সূত্র: দ্য ওয়াল, জি নিউজ।