বাতাস থেকে তৈরি হচ্ছে পানযোগ্য পানি

শুষ্ক অঞ্চলে বসবাসকারীদের ভয়াবহ সমস্যা পানযোগ্য পানির অভাব। সেই সমস্যা নিরসনে বাতাস থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেছে স্পেনের একটি কোম্পানি। ১৯৯০-এর দশকে দক্ষিণাঞ্চলীয় স্পেনে ভয়াবহ খরার সময় যন্ত্রটি উদ্ভাবন করেন ৮২ বছর বয়সী প্রকৌশলী এনরিক ভেইজা। তিনি জানান, মানুষকে সহায়তা করাই উদ্দেশ্য। এর মাধ্যমে শরণার্থী শিবিরের মতো যেসব স্থানে পানযোগ্য পানির অভাব রয়েছে সেখানকার সমস্যা নিরসন করা যাবে।

প্রকৌশলী এনরিক ভেইজার কোম্পানির উদ্ভাবিত ডিভাইসটির নাম অ্যাকুয়াইর। এর মাধ্যমে ইতোমধ্যে নামিবিয়া ও লেবাননের শরণার্থী শিবিরে পরিষ্কার এবং নিরাপদ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এনরিক ভেইজা বলেন, ‘নামিবিয়ার যেসব গ্রাম পরিদর্শন করেছি, তারা অবাক হয়েছেন, তারা বুঝতে পারেননি, জানতে চেয়েছেন পানি কোন জায়গা থেকে আসছে।’

উদ্ভাবিত যন্ত্রের সঙ্গে প্রকৌশলী এনরিক ভেইজা

যন্ত্রটি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে বাতাসকে ঠান্ডা করে পানিতে পরিণত করে। ঠিক যেভাবে এয়ারকন্ডিশনার ইউনিট ঘনীভবনের কাজ করে, সেভাবে। একই পদ্ধতিতে কাজ করা জেনারেটরগুলোর জন্য বেশি আর্দ্রতার এবং কম তাপমাত্রার বাতাসের দরকার পড়ে। তবে ভেইজার উদ্ভাবিত যন্ত্রটি ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা পর্যন্ত কার্যকর থাকে, আর ১০ থেকে ১৫ শতাংশ আর্দ্রতার বাতাস থেকেও পানি নিষ্কাশন করতে পারে।

ছোট একটি যন্ত্র প্রতিদিন ৫০ থেকে ৭৫ লিটার পানি উৎপাদন করতে পারে। এছাড়া এটি সহজেই একটি ট্রলিতে বহন করা যায়। কিন্তু বড় আকারের যন্ত্র হলে তা থেকে প্রতিদিন পাঁচ হাজার লিটার পানি উৎপাদন করা যায়। প্রকৌশলী এনরিক ভেইজা বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা কেবল কার্যকর ডিভাইস বানানো নয়; বরং সেসব মানুষের উপযোগী করে তোলা, যারা পানির জন্য মাইলের পর মাইল পাড়ি দেয় কিংবা কূপ খনন করে।’

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক ভিয়েতনামিজ শরণার্থী নাট ভুয়োং ২০১৭ সালে লেবাননের একটি শরণার্থী শিবির পরিদর্শন এবং ভেইজার সঙ্গে বৈঠকের পর যন্ত্রটির বিষয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তিনি ওয়াটার ইনসেপশন নামে একটি অলাভজনক সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। সংস্থাটি প্রতিদিন পাঁচশ’ লিটার পানি উৎপাদনে সক্ষম একটি যন্ত্র নিয়ে এসেছে। যন্ত্রটি ঠিকঠাক কাজ করছে বলে জানান তিনি। বর্তমানে বিদ্যুৎ খরচ কমিয়ে আনতে আর পরিবেশগত প্রভাব এড়াতে সোলার প্যানেল বসানোর জন্য তহবিল সংগ্রহ করছেন তিনি।

সূত্র: রয়টার্স