‘বিচলিত’ লিথুয়ানিয়ায় ন্যাটোর সামরিক মহড়া

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনে পূর্ব ইউরোপের ‘বিচলিত’ দেশ লিথুয়ানিয়াতে সামরিক মহড়া চালিয়েছে পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটো। পূর্ব লিথুয়ানিয়ার পাবরাদে সামরিক ঘাঁটিতে এই মহড়ায় কোনও তাজা বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়নি। মহড়ায় মার্কিন ও নরওয়ের সেনারা রুশ বাহিনীর ভূমিকায় ছিলেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এখবর জানিয়েছে।

১৯৯০ থেকে স্বাধীন রাষ্ট্র লিথুয়ানিয়া। দীর্ঘদিন ধরে দেশটিকে ন্যাটো জোটের ‘একিলিস হিল’ (দুর্বলতা) হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দেশটির পূর্ব পাশে রয়েছে রুশ মিত্র বেলারুশ, পশ্চিম পাশে রুশ ছিটমহল কালিনিনগ্রাদ। ইউক্রেনে যুদ্ধ চলমান থাকা অবস্থাতেই রুশ বিশেষজ্ঞরা সংঘাত লিথুয়ানিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত করার আহ্বান জানাচ্ছে। তারা লিথুয়ানিয়ার সঙ্গে পোল্যান্ডে স্বল্পদৈর্ঘ্যের করিডোর দখল করতে বলছেন। এটি করলে রাশিয়া ন্যাটো মিত্রদের বাল্টিক থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে।

লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েলিয়াস ল্যান্ডসবার্গিস বলেন, গত বছর নভেম্বর পর্যন্ত রুশ সেনারা ন্যাটো সীমান্ত থেকে অনেক দূরে ছিল। কিন্তু এখন সামরিক কর্মকাণ্ড খুব কাছাকাছি চলে আসছে। বেলারুশ ও কালিনিনগ্রাদের মধ্যখানে লিথুয়ানিয়ার অবস্থান। এর ফলে আমরা একটি কৌশলজনক অবস্থানে রয়েছি।

২০১৬ সাল থেকে ন্যাটোর পূর্ব শাখা: পোল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়াতে ব্যাটলগ্রুপের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এই অঞ্চলে জোটের উপস্থিতি আরও জোরদার করা হয়েছে। রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়াতে বহুজাতিক ব্যাটালিয়ন মোতায়েন করা হয়েছে।

লিথুয়ানিয়াতে ন্যাটো সেনার সংখ্যা ১২০০ থেকে বাড়িয়ে প্রায় ১৬০০ করা হয়েছে। এই বাহিনীর কাছে রয়েছে জার্মান সেনাবাহিনীর হালকা ও ভ্রাম্যমাণ বিমান-বিধ্বংসী অস্ত্র। যা যেকোন বিমান হামলা থেকে সুরক্ষা দিতে পারবে।

এক কর্মকর্তা জানান, ‘রাইজিং গ্রিফিন’ নামের এই মহড়ায় ডেভিড বনাম গোলিয়াথ লড়াইয়ের অনুশীলন করা হয়েছে। আক্রমণকারী বাহিনী দৈত্যের ভূমিকায় ছিল। মহড়ার মূল লক্ষ্য ছিল, শত্রুদের অগ্রগতি প্রতিহত নয়, বিলম্বিত করো।

ন্যাটো সদস্যরা জুন মাসে মাদ্রিদে বৈঠকের প্রস্তুতির নিচ্ছে। বাল্টিক প্রতিবেশী এস্তোনিয়াসহ লিথুয়ানিয়া ন্যাটোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তাদের প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করার জন্য।

দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া ও বেলারুশে আমরা যা দেখছি যা বিপজ্জনক। সার্বভৌম রাষ্ট্রে তাদের আক্রমণের অভীপ্সা রয়েছে। এটি দ্বিমুখী তলোয়ার: একদিকে রাশিয়া ইউক্রেনে দেখিয়ে দিয়েছে তাদের আঞ্চলিক প্রভাব কমছে। অপরদিকে এটি এখনও যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতি করার সক্ষমতা রাখে। আমাদের বাল্টিক দেশগুলোকে রক্ষা করতে হবে। বিশেষ করে যেগুলো ভৌগলিকভাবে রাশিয়ার কাছে আকর্ষণীয়।