ফিনল্যান্ড, সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদান ঠেকাবে তুরস্ক?

ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের জেরে ফিনল্যান্ড ও সুইডেনকে ন্যাটো জোটের সদস্য হওয়ার প্রস্তাবে তুরস্কের সমর্থন দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। শুক্রবার তিনি ইস্তাম্বুলে সাংবাদিকদের বলেন, স্ক্যান্ডেনেভিয়ান দেশ দুইটির সামরিক জোটে যোগ দেওয়ার আগ্রহ নিয়ে তুরস্কের মনোভাব ইতিবাচক নয়। উল্লেখ্য, তুরস্ক পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য।

ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের প্রতি ইঙ্গিত করে এরদোয়ান অভিযোগ করেন, দেশ দুইটি ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর গেস্টহাউজ’। তিনি বলেন, ‘এমনকি তারা কোনও কোনও দেশের পার্লামেন্ট সদস্য। আমাদের পক্ষে তাদের সমর্থন করা সম্ভব নয়।’ তবে এর বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।

আঙ্কারা যাদের ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন আখ্যায়িত করে থাকে তাদের সঙ্গে সুইডেন এবং অন্য পশ্চিমা দেশগুলোর সম্পর্ক নিয়ে বারবার সমালোচনা করেছে তুরস্ক। এসব সংগঠনের মধ্যে  কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) এবং সিরিয়ান কুর্দিশ পিপল’স প্রোটেকশন ইউনিট (ওয়াইপিজি) এবং যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত মুসলিম একাডেমিক ফেতুল্লাহ গুলেনের অনুসারিরা রয়েছেন।

আঙ্কারা বলে আসছে গুলেনের অনুসারিরা ২০১৬ সালে অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টা চালায়। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন গুলেন ও তার অনুসারীরা।

৩০ সদস্যের সামরিক জোট ন্যাটোতে নতুন দেশকে সদস্য করতে হলে জোটভুক্ত সব দেশের সর্বসম্মত অনুমোদনের দরকার পড়ে। ফলে তুরস্ক বিরোধিতা করলে ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটো সদস্য হওয়ার আকাঙ্ক্ষা ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

বর্তমানে বেশ কিছু ইস্যুতে তুরস্ক ও গ্রিসের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে জানিয়ে এরদোয়ান বলেন, ১৯৫২ সালে গ্রিসকে সদস্য হিসেবে স্বীকার করে নেওয়া ন্যাটোর ভুল ছিল। আর এখন সেই ‘একই ভুলের’ পুনরাবৃত্তি না করার আহ্বান জানান তিনি। তুরস্ক নিজেও ১৯৫২ সালে ন্যাটো সদস্য হয়।

বৃহস্পতিবার ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী জানান তারা অবিলম্বে ন্যাটো সদস্য হওয়ার আবেদন করবেন। তবে এর জোরালো বিরোধিতা প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে মস্কো।

রাশিয়ার সঙ্গে এক হাজার তিনশ’ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত থাকা ফিনল্যান্ড আগামী রবিবার তাদের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশটির সিনিয়র রাজনৈতিক নেতাদের বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত ঘোষিত হতে পারে। সুইডেনও একই পথ অনুসরণ করতে পারে।

সূত্র: আল জাজিরা