এরদোয়ানের সঙ্গে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের নেতাদের আলোচনা

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের সঙ্গে আলোচনা করেছেন সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের নেতারা। শনিবার ফোনে কথা হয় তিন দেশের নেতাদের। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য পদপ্রত্যাশী দেশ দুইটির নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় ‘সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো’ সম্পর্কে আঙ্কারার উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করেছেন এরদোয়ান।

তুরস্কের অভিযোগ, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)-এর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের আশ্রয় দিয়ে থাকে। এই দলটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে আঙ্কারা।

এছাড়া তুরস্কের ২০১৬ সালের ব্যর্থ অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্ত ফেতুল্লাহ গুলেনের অনুসারীদেরও আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের বিরুদ্ধে।

তুর্কি প্রেসিডেন্টের দফতরের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসনের সঙ্গে আলাপকালে এরদোয়ান আঙ্কারার উদ্বেগগুলো সমাধানে জোরালো পদক্ষেপের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। সুইডিশ প্রধানমন্ত্রীও তুরস্কের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের আশাবাদের কথা জানিয়েছেন।

ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসন এক বিবৃতিতে বলেছেন, সুইডেন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহযোগিতার সম্ভাবনাকে স্বাগত জানায়। এরদোয়ানের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ওপর জোর দিয়েছেন। পিকেকে গোষ্ঠীকে সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্তির প্রতিও সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।

ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সাউলি নিনিস্তোর সঙ্গে ফোনালাপে এরদোয়ান বলেছেন, একটি ন্যাটো মিত্রের ওপর হুমকি সৃষ্টিকারী সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হওয়া জোটের চেতনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

নিনিস্তো বলেছেন, তিনি এরদোয়ানের সঙ্গে ‘উন্মুক্ত ও সরাসরি’ আলোচনা করেছেন এবং ঘনিষ্ঠ সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছেন।

এদিকে ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটো সদস্যপদ নিয়ে শনিবার এরদোয়ানের সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলেছেন ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবার্গ। এ সময় এরদোয়ান জানিয়েছেন, তুরস্কের উদ্বেগের বিষয়গুলো সমাধান না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য মিত্রদের সমর্থন সত্ত্বেও সুইডেন-ফিনল্যান্ডের ন্যাটোতে যোগদান ইতিবাচকভাবে দেখবে না আঙ্কারা।

গত সপ্তাহে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের পদক্ষেপের বিরোধিতার ঘোষণা দিয়ে ন্যাটো মিত্রদের কিছুটা অবাক করে দেয় তুরস্ক। কুর্দি যোদ্ধাদের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহারে সুইডেনের ওপর চাপ প্রয়োগ করে আঙ্কারা। এসব যোদ্ধাদের সন্ত্রাসী গ্রুপ বলে বিবেচনা করে আসছে তুরস্ক। ২০১৬ সালে তুরস্কে ব্যর্থ অভুত্থ্যানে জড়িত ফেতুল্লাহ গুলেনকেও আশ্রয় দিয়েছে সুইডেন। অন্যদিকে তুরস্কের কাছে অস্ত্র বিক্রিতে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারেরও আহ্বান জানিয়েছে আঙ্কারা।

ন্যাটো মহাসচিবকে এরদোয়ান বলেন, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড মৌলিক বিষয়ে যতক্ষণ না পরিষ্কার মনোভাব দেখাবে, বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তুরস্কের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করবে, ততক্ষণ এই দেশগুলোর ন্যাটোর সদস্য হওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখবো না আঙ্কারা।