কিয়েভের কাছে এখনও মিলছে রুশ সেনাদের পরিত্যক্ত মরদেহ

জঙ্গলের মধ্যে কুকুরের ক্রমাগত খোঁড়াখুড়ি করতে দেখে জাভালিভকা গ্রামের বাসিন্দারা কর্তৃপক্ষকে খবর দেয়। দ্রুতই ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে হাজির হয়। নিরাপত্তা পোশাকে সজ্জিত দলটি সতর্কতার সঙ্গে ওপরের মাটি সরিয়ে ফেলে।

তারা একজন মানুষের শরীর উন্মোচন করে, তার পা শরীরের নিচে অদ্ভূতভাবে মোড়ানো। ইউনিফর্ম দেখেই বোঝা যাচ্ছিল এটা এক রুশ সেনার মরদেহ।

ইউক্রেনের রাজধানী দখলে ব্যর্থ হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরও রুশ সেনাদের মরদেহ এখনও পাওয়া যাচ্ছে। তারা কিয়েভের কাছে যেসব এলাকা দিয়ে গেছে কিংবা দখল করেছে সেসব এলাকাতে এগুলো পাওয়া যাচ্ছে। তবে ইউক্রেন বলছে, তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে খুব কমই আগ্রহ দেখাচ্ছে রাশিয়া।

জঙ্গলের কবর থেকে তোলা মরদেহটি কিয়েভের কাছে একটি ফ্রিজিং ট্রেনে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই ট্রেনটি রুশ সেনাদের ভ্রাম্যমাণ মর্গ হিসেবে কাজ করছে।

মরদেহ রাখা সাদা প্লাস্টিকের বস্তায় নামের বদলে সংখ্যা দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র প্রতিবেদকেরা যেদিন সেটি দেখতে যান সেদিন ট্রেনের দুটি কামরায় কমপক্ষে ১৩৭টি মরদেহ ছিল।

তারা আরও দেখেন, ইউক্রেনীয়রা মরদেহগুলো শনাক্ত করার চেষ্টা করছে। সদ্য আনা লাশের ওপর, ফরেনসিক দল দুটি ব্যাংক কার্ড, সেই সঙ্গে একটি রুশ মোটর চালিত রাইফেল ব্রিগেডের ব্যাজ রেখে দেয়।

দায়িত্বরত ব্যক্তিটি জানালেন, ‘অন্তত এই সেনার ঘরে ফেরার সুযোগ আছে’। কয়েক মুহূর্ত পরে, আমি নিশ্চিত হয়েছি যে লোকটিকে এইমাত্র উদ্ধার করতে দেখলাম তিনি সাইবেরিয়ার একজন যুবক ও বিবাহিত। তার বডি ব্যাগের পাশে, তার সোশাল মিডিয়া প্রোফাইল থেকে একটি কালো-সাদা ফটোগ্রাফ আমার ফোন থেকে বেরিয়ে এলো।

রাশিয়ার একটি গর্বিত স্লোগান রয়েছে, ‘আমরা নিজেদের মানুষকে ত্যাগ করি না’। ইউক্রেনে আক্রমণের ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রচেষ্টার বড় অংশ এই স্লোগান। যেখানে তিনি মিথ্যাভাবে দাবি করেছিলেন যে, ইউক্রেনের রুশ ভাষাভাষীদের সুরক্ষা প্রয়োজন।

বিবিসি লিখেছে, তবে এখন মনে হচ্ছে এই প্রতিশ্রুতি রাশিয়ার নিজেদের সেনাদের জন্য ক্ষেত্রে খুব বেশি প্রযোজ্য নয়।

সূত্র: বিবিসি