লিথুয়ানিয়াকে হুঁশিয়ার করলো রাশিয়া

রুশ অঞ্চল কালিনিনগ্রাদে পণ্য পৌঁছাতে বাধা দেওয়ায় লিথুয়ানিয়াকে সতর্ক করে দিয়েছে রাশিয়া। মস্কো জানিয়েছে, দেশটিকে ‘ধারাবাহিক’ পরিণতি ভোগ করতে হবে। ঊর্ধ্বতন রুশ নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিকোলাই পাত্রুশেভ বলেন, রাশিয়া ‘অবশ্যই এই শত্রুতামূলক পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া দেখাবে’।

কালিনিনগ্রাদে পণ্য পৌঁছাতে লিথুয়ানিয়ার রেল ট্রানজিট ব্যবহার করে রাশিয়া। সেখানে পণ্য পৌঁছানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে লিথুয়ানিয়া বলেছে তারা কেবল ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নিষেধাজ্ঞা অনুসরণ করছে। ইউক্রেনে আগ্রাসনের জেরে মস্কোর ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইইউ।

কৌশলগত অঞ্চল হিসেবে কালিনিনগ্রাদের গুরুত্ব অনেক বেশি। এই অঞ্চলে রাশিয়ার বাল্টিক বহরের সদর দফতর। তবে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে এর কোনও সীমানা নেই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৫ সালে জার্মানির কাছ থেকে কালিনিনগ্রাদ দখল করে নেয় রাশিয়া। এই অঞ্চলটির সঙ্গে ইইউ এবং ন্যাটো সদস্য দেশ লিথুয়ানিয়া এবং পোল্যান্ডের সীমান্ত রয়েছে।

অঞ্চলটি মারাত্মকভাবে লিথুয়ানিয়ার ভেতর দিয়ে যাওয়া রেল ট্রানজিটের ওপর নির্ভর করে। ইইউ লিথুয়ানিয়ার বিবৃতির প্রতিধ্বনি করে বলেছে দেশটি কেবল ইউক্রেনে আগ্রাসনের জেরে রাশিয়ার ওপর ইইউ এর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করছে।

মঙ্গলবার কালিনিনগ্রাদ সফরের সময় রুশ নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিকোলাই পাত্রুশেভ বলেন, লিথুয়ানিয়ার এই অবরোধ পশ্চিমাদের আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। রাশিয়ার নিরাপত্তা কাউন্সিলের এই সেক্রেটারি বলেন নিকট ভবিষ্যতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিকোলাই পাত্রুশেভ আরও বলেন, ‘তাদের পরিণতি লিথুয়ানিয়ার জনগোষ্ঠীর ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে’। তবে বিস্তারিত জানাননি তিনি। এর আগে এই ইস্যুতে মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতকে তলব করে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

গত সপ্তাহে, লিথুয়ানিয়ার কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া পণ্যগুলোকে তাদের অঞ্চল দিয়ে কালিনিনগ্রাদে পৌঁছানো নিষিদ্ধ করবে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েলাস ল্যান্ডসবার্গিস বলেন, ‘এখানে লিথুয়ানিয়া কিছু করছে না: এটি ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞা যা ১৭ জুন থেকে কার্যকর হচ্ছে … এটি ইউরোপীয় কমিশনের পরামর্শে এবং ইউরোপীয় কমিশনের নির্দেশিকা অনুসারে এটি কার্যকর হচ্ছে’।

ইইউ এর নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে কয়লা, ইস্পাত, নির্মাণ সামগ্রি এবং আধুনিক প্রযুক্তি।  রাশিয়ার কালিনিনগ্রাদ অঞ্চলের গভর্নর অ্যান্টন আলিখানোভ বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে কালিনিনগ্রাদের আমদানি করা পণ্যের ৫০ শতাংশ।

ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে লিথুয়ানিয়ার প্রতিরক্ষা যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তির আওতায় সুরক্ষিত।

সূত্র: বিবিসি