আয়লানের মৃত্যুর ঘটনায় দুই পাচারকারীর বিচার শুরু



তুরস্কের উপকূলে নিথর পড়ে থাকা তিন বছরের শরণার্থী শিশু আয়লান কুর্দি নাম শুনলে এখনও স্তব্ধ হয়ে যান অনেকে। ২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ে ছোট নৌকায় থাকা আয়লান ও তার ভাই ভেসে যায় তুরস্কের সৈকতে। তাদের মা ভেসে যান দূরের অন্য এক সৈকতে। অবশেষে আয়লানের এমন নির্মম মৃত্যুর ঘটনায় দুই সিরীয় পাচারকারীকে বিচারের মুখোমুখি করেছে তুরস্ক।

অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি হলেন মুয়াফাকা আলাবাস ও আসেম আলফ্রাহাদ। আয়লান পরিবারের তিন সদস্যসহ পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনায় বৃহস্পতিবার তুরস্কে তাদের বিচার শুরু হয়েছে। বিচারে দোষী প্রমাণিত হলে মানবপাচার ও খুনের দায়ে তাদের সর্বোচ্চ ৩৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

noname

সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের কারণে আয়লানের বাবা আবদুল্লাহ কুর্দি, তার মা ও আয়লানের ভাইকে সঙ্গে নিয়ে নিয়ে তুরস্কে যান। তুরস্ক থেকে নৌকায় করে গ্রিসের উদ্দেশে রওনা হয়। কিন্তু সাগরে নৌকা ডুবে গেলে বাবা আবদুল্লাহ ছাড়া বাকি তিনজন মারা যায়।

আয়লানের ফুপু ফাতিমা কুর্দি জানান, মৃত্যুর আগ মুহূর্তে আয়লানের মুখে ছিল প্রিয় বাবার নাম। ডুবে যেতে যেতেও বাবার গলা জড়িয়ে ধরে আয়লান বলেছিল, ‘বাবা, প্লিজ তুমি মরে যেও না’। তবে বাবা তখন ব্যস্ত ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই করে আয়লানকে বাঁচাতে।

তিমা কুর্দি জানান, নৌকাটি ডুবে যাওয়ার আগে; আমার ভাই তার স্ত্রী, কন্যা ও আয়লানকে ঢেউয়ের কবল থেকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছিলো। তবে একে একে সবাইকে ডুবে যেতে দেখা ছাড়া হয়তো তার কিছুই করার ছিল না। যখন ঢেউয়ের কবলে নৌকাটির সামনের দিক উঁচু হয়ে যাচ্ছিলো, তখন আয়লানের বাবার দুই বাহুতে তার দুই সন্তান। নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে তিনি আয়লানকে পানির উপরে তুলে ধরার চেষ্টা করছিলেন। আর তখন আয়লান চিৎকার করে বলেছিলো, ‘বাবা, প্লিজ তুমি মরে যেও না।’ এই কথা বলতে বলতেই সমুদ্রের ঢেউ ছোবল মেরে নিয়ে যায় আয়লানকে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

/এমপি/