রাশিয়ার পিছু হটা কেন উদযাপন করছে না ইউক্রেন?

ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খেরসন শহর থেকে বুধবার সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। অনেকেই ধারণা করছিলেন, শহরটি পুনরুদ্ধারে কয়েক সপ্তাহ ধরে পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে আসা ইউক্রেনীয়রা গুরুত্বপূর্ণ বিজয় হিসেবে ঘটনাটিকে স্বাগত জানাবে। কিন্তু ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিসহ দেশটির কর্মকর্তারা সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসন প্রদেশের ডিনিপ্রো নদীর পশ্চিম তীর থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে সন্দিহান। মার্কিন সাময়িকী নিউজউইক এখবর জানিয়েছে।

বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, আমাদের আবেগ নিয়ন্ত্রিত হতে হবে। শত্রুরা আমাদের জন্য উপহার নিয়ে আপসেনি। তাই, আমরা খুব সতর্কতার সঙ্গে এগিয়ে যাব, আবেগ ছাড়া, কোনও অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি নেব না।

যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়া ইউক্রেনে গুরুত্বপূর্ণ যে বড় অঞ্চল দখল করেছিল সেটি হচ্ছে খেরসন। চলমান যুদ্ধে খেরসন দখল ছিল রাশিয়ার সবচেয়ে বড় অর্জন। সেপ্টেম্বরে অবৈধ গণভোট আয়োজনের পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যে চারটি ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডকে রাশিয়ার অংশ বলে ঘোষণা করেছেন খেরসন সেগুলোর একটি।

ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাবাহিনীর প্রেস সেন্টারের যুগ্ম সমন্বয় প্রধান নাতালিয়া হুমেনিউকও সতর্কতা প্রকাশ করেছেন। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহার কিয়েভকে ভুল পথে পরিচালিত করতে মনোজাগতিক যুদ্ধের অংশ হতে পারে।

নাতালিয়া বলেন, রুশ দখলদারদের একাংশ হয়ত ভুল ইঙ্গিত দিয়ে তাদের প্রকৃত পরিকল্পনা করতে চাইতে পারে। ফলে আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী সেনা প্রত্যাহার যে উসকানি নয়, তা উড়িয়ে দিচ্ছে না।

জেলেনস্কির সিনিয়র উপদেষ্টা মিখাইলো পড়োলিয়াকও রুশ সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণায় সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, খেরসনে এখনও রাশিয়ার উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় সেনা অবস্থান করছে। যা ইঙ্গিত দিচ্ছে, কোনও লড়াই ছাড়া শহরটি তারা ছাড়বে না।

ইউক্রেনের উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী হানা মালিয়ার বলেছেন, রুশদের বিশ্বাস করা যায় না। যুদ্ধের কৌশলনের মধ্যে শত্রুদের ধোঁকা দেওয়াও একটি শিল্প।

ইউক্রেনীয় একটি সামরিক সূত্র বলেছে, রাশিয়া হয়ত সময় পেতে চাইছে। যাতে করে তারা ডিনিপ্রো নদীর পূর্ব তীরে একটি প্রতিরক্ষা লাইন প্রস্তুত করতে পারে। পূর্ব তীরেই প্রত্যাহারকৃত সেনাদের মোতায়েন করা হচ্ছে। ফলে এক দিনে তারা আত্মসমর্পণ করে ফেলবে বলে আমরা মনে করছি না। তারা যত সময় সম্ভব ইউক্রেনীয়দের পশ্চিম তীরে রাখতে চায়। কিন্তু আমরা অপেক্ষায় বসে নেই। আমরা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।

সূত্র: নিউজউইক