ইউক্রেনীয় সেনাদের ভীতু বলবেন না: ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিন

রুশ ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন আবারও রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুর সমালোচনা করেছেন। অতীতে তার বাহিনীকে গোলাবারুদ না দেওয়ার জন্য সমালোচনা করলেও এবার রণক্ষেত্র থেকে দূরে থাকায় শোইগুকে আক্রমণ করেছেন তিনি। একই সঙ্গে ইউক্রেনীয় সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তাদেরকে ভীতু বলবেন না। মঙ্গলবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ খবর জানিয়েছে।

রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সমালোচনার পাশাপাশি বাখমুত ঘিরে ওয়াগনার বাহিনীর অগ্রগতি নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নেরও জবাব দিয়েছেন প্রিগোজিন।

সের্গেই শোইগু দাবি করেছেন, ফেব্রুয়ারিতে বাখমুতের আশেপাশে ১১ হাজার ইউক্রেনীয় সেনাকে হত্যা করেছে রুশবাহিনী।

ওয়াগনার প্রধান শোইগুর এমন দাবির পর টেলিগ্রাম চ্যানেলে এক পোস্টে নিহতের সংখ্যার নিয়ে একমত পোষণ করলেও এর কৃতিত্ব নিজের বাহিনীর বলে দাবি করেছেন। তিনি লিখেছেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পর্যালোচনা সঠিক বলেই আমি মনে করি। ওয়াগনার গ্রুপ ফেব্রুয়ারিতে ১১ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে।

হতাহত নিয়ে শোইগু বা প্রিগোজিনের দাবি স্বতন্ত্রভাবে সিএনএনের পক্ষ থেকে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। ন্যাটোর গোয়েন্দা তথ্য অনুসারে, বাখমুত রক্ষায় ইউক্রেনের এক সেনার বিপরীতে রাশিয়া অন্তত পাঁচ সেনা হারিয়েছে। সোমবার এক কর্মকর্তা এমন মন্তব্য করেছেন।

শোইগুর বাখমুত রণক্ষেত্র সফর না করার সমালোচনা করে প্রিগোজিন বলেন, শোইগুর মন্তব্য নিয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না। আর্তেমভস্কতে (বাখমুতের সোভিয়েত আমলের নাম) আমি তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করিনি।

বাখমুত এলাকায় একাধিকবার প্রিগোজিনকে দেখা গেছে। এই সপ্তাহে শোইগু রাশিয়ার দখলকৃত ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড সফর করেছেন। তবে তিনি রণাঙ্গনে হাজির হননি।

টেলিগ্রামে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রিগোজিন বলেছেন, বাখমুতে এখনও ১২ থেকে ২০ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা রয়েছে। বাখমুত থেকে এই সেনাদের সরাতে হলে অবশ্যই হত্যা করতে হবে।

তিনি বলেন, বিশ্বাস করুন, এটির জন্য আমরা সবকিছু করছি। যদিও আমাদের এখন পর্যন্ত গোলাবারুদ, সামরিক সরঞ্জাম, অস্ত্র ও যানবাহান দেওয়া হয়নি। ও হ্যাঁ, প্রায় এক মাস পর বেলচা দেওয়া হয়েছে।

ওয়াগনার গ্রুপকে গোলাবারুদ ও সামরিক সরঞ্জাম না দেওয়ায় অতীতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা বেশ কয়েক বার করেছে প্রিগোজিন।

টেলিগ্রামে আবারও ইউক্রেনীয় সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনীয় সেনাদের দেহেও একই রক্ত বইছে।

প্রিগোজিন বলেন, দিন ও রাতে কঠিনতম লড়াই চলছে। কিন্তু ইউক্রেনীয় কোথাও পালিয়ে যাচ্ছে না। ইউক্রেনীয়রা পালাচ্ছে না। বাখমুতের জন্য তারা প্রাণ দিচ্ছে। তাদের শেষ পথ হলো আত্মসমর্পণ। তাদের ভীতু বলবেন না। আমাদের মতোই তারা, তাদের দেহেও একই রক্ত বইছে।