বিশ্ববাজারে আবারও বাড়লো জ্বালানি তেলের দাম। আগামী দিনগুলোতে ইরাকি ভূখণ্ড ব্যবহার করে ইরান ইসরায়েলের ওপর প্রতিশোধমূলক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে—এমন খবর প্রকাশ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেলো। সাপ্তাহিক লোকসান কমাতে শুক্রবার (১ নভেম্বর) তেলের দাম এক শতাংশেরও বেশি বাড়ানো হয়েছে, যা ব্যারেল প্রতি ১ ডলারেরও বেশি। এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রেন্ট ক্রুডের মূল্য ব্যারেল প্রতি ১ দশমিক ৩৯ ডলার বা ১ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। এর পূর্ব মূল্য ছিল ব্যারেল প্রতি ৭৪ দশমিক ২০ ডলার। আর ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের দাম ব্যারেল প্রতি ১ দশমিক ৪৪ ডলার বা ২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৭০ দশমিক ৭০ ডলার হয়েছে।
ইসরায়েলি গোয়েন্দারা দাবি করেছে, ইরান আগামী দিনে ইরাকি ভূখণ্ড থেকে বিপুল সংখ্যক ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে ইসরায়েলে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। খুব সম্ভবত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই এই হামলা হতে পারে। দুটি অজ্ঞাত ইসরায়েলি সূত্রের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার এই খবর প্রকাশ করেছিল মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস।
এসইবি গবেষণা বিশ্লেষক ওলে হাভালবি বলেছেন, এটি মার্কিন নির্বাচনের আগে অতিরিক্ত শত্রুতা ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তোলে।
তেলের চাহিদা ও ক্রমবর্ধমান সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে বুধবার বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত চারটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, ওপেক+ ডিসেম্বরের পরিকল্পিত তেল উৎপাদন এক মাস বা তারও বেশি সময় বিলম্বিত করতে পারে এই ঘোষণা দেওয়ার পর তেলের দাম বাড়বে বলে প্রত্যাশা ছিল।
সূত্রদের মধ্যে দুজন বলেছেন, এ বিষয়ে আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে সাপ্তাহিক লোকসান এক শতাংশেরও বেশি হতে পারে। ২৬ অক্টোবর ইরানের সামরিক বাহিনীর ওপর ইসরায়েলি হামলার পর, সোমবার তেলের মূল্যে ৬ শতাংশ পতন ঘটেছিল।
হালভি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি যদিও প্রত্যাশার চেয়ে শিগগিরই খারাপ হতে পারে, ইসরায়েল ও ইরান উভয়কেই একটি সর্বাত্মক আঞ্চলিক যুদ্ধের দিকে যেতে অনিচ্ছুক বলে মনে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘যেকোনও অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানোর সময় ইরান সংযত থাকতে পারে, গত সপ্তাহান্তে ইসরায়েলের করা সীমিত হামলার মতো। তাই প্রাথমিকভাবে যুদ্ধের আমন্ত্রণের পরিবর্তে একে শক্তি প্রদর্শন হিসেবেই দেখা যেতে পারে।’
আইজি বিশ্লেষক টনি সাইকামোর বলেছেন, আগামী সপ্তাহে মার্কিন নির্বাচন ও চীনের এনপিসি স্থায়ী কমিটির বৈঠকের আগে সব ধরণের বাজিগিরি বন্ধ থাকবে।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এটি মার্কিন নির্বাচনে কে জিতবে এবং এনপিসি স্থায়ী কমিটির বৈঠক থেকে কর কর্তন বিষয়ে বিশদ কোনও সিদ্ধান্ত যদি থাকে তার ওপর নির্ভর করবে।’
বিশ্লেষকরা বলেছেন, ইরান ও রাশিয়াকে নিয়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভিন্ন মতামত রয়েছ, যা তেল উৎপাদনকারীদের বিষয়ে মার্কিন নীতিতে পরিবর্তন আনতে পারে।