ইস্তাম্বুলের বৈঠকে আরও ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড দাবি করেছে রাশিয়া

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণাধীন আরও অঞ্চল দাবি করেছে রাশিয়া। আলোচনার সঙ্গে জড়িত এক জ্যেষ্ঠ ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা জানান, যুদ্ধবিরতির জন্য রুশ পক্ষ শর্ত দেয় যে, ইউক্রেনকে তাদের সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করতে হবে সেই সব অঞ্চল থেকে যেগুলোর ওপর রাশিয়া দাবি করে আসছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা  বলেন, এই দাবিসহ রাশিয়ার আরও কয়েকটি শর্ত ছিল যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত খসড়া চুক্তির চেয়েও কঠোর। এসব শর্ত বাস্তবতাবিবর্জিত এবং গ্রহণযোগ্য নয়।

তিন বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো রাশিয়া ও ইউক্রেন মুখোমুখি শান্তি আলোচনায় বসে শুক্রবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে। তবে আলোচনা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়। এর পরিবর্তে বন্দি বিনিময়ে একমত হয় দুই দেশ।

শুক্রবার এক ইউক্রেনীয় সূত্র জানিয়েছিল, রুশরা এমন কিছু শর্ত দিয়েছে যা আলোচনার যোগ্যই নয়। তখন তিনি বিস্তারিত জানাননি।

ইউক্রেনীয় কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার মৌখিকভাবে তুলে ধরা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে:  ইউক্রেনসহ সব পক্ষকে যুদ্ধক্ষয়ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি থেকে বিরত থাকতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের এপ্রিলে প্রস্তাবিত খসড়ায় ইউক্রেনের জন্য ক্ষতিপূরণের কথা উল্লেখ ছিল।

তবে রুশ প্রতিনিধি দল কোনও লিখিত প্রস্তাব দেয়নি। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা এটিকে রাশিয়ার গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনাকে না নেওয়ার প্রমাণ হিসেবে দেখছেন।

শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এই আলোচনাগুলোর বিস্তারিত প্রকাশ্যে বলা যায় না। এগুলো বন্ধ দরজার পেছনে হওয়া উচিত।

রাশিয়ার আলোচক দল বৈঠকের ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করলেও ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা হতাশ। মস্কোর সঙ্গে আলোচনার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ একটি খসড়া শান্তি প্রস্তাব তৈরি করেন। ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা এই খসড়ায় পরিবর্তন এনে নিজেদের পক্ষ থেকে একটি বিকল্প প্রস্তাব দেন। তাতে প্রাথমিকভাবে যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয় এবং ভূখণ্ড নিয়ে আলোচনাকে পরবর্তী পর্যায়ে স্থগিত রাখা হয়।

তবে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়ার বর্তমান অবস্থান বাস্তবসম্মত নয়। কিয়েভ ইতোমধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে—রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে।