ইয়েমেনের তিনটি বন্দর এবং একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে হুথিদের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সোমবার (৭ জুলাই) ভোরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইয়েমেনের হোদাইদাহ, রাস ইসা এবং সালিফ বন্দর এবং রাস কান্তিব বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। গত এক মাসের মধ্যে ইয়েমেনে এটাই প্রথম ইসরায়েলি হামলা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, ইসরায়েলে হুতিদের একের পর এক আক্রমণের জবাবে ইয়েমেনে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
হামলার কয়েক ঘণ্টা পর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, ইয়েমেন থেকে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। সেগুলো প্রতিহত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে প্রতিরোধ সফল হয়েছে কিনা—তা এখনো পর্যালোচনার অধীন। হামলায় তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর, ইরান-সমর্থিত হুথিরা ইসরায়েলের পাশাপাশি লোহিত সাগরের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে একাধিক হামলা চালিয়ে আসছে। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতির প্রকাশের অংশ হিসেবে এসব হামলা চালানোর দাবি করেছে হুথিরা।
তবে ইসরায়েলের দিকে নিক্ষিপ্ত ডজনের বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের বেশিরভাগই প্রতিহত হয়েছে অথবা লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। ইসরায়েল একাধিক পাল্টা হামলাও চালিয়েছে।
সোমবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আরও জানায়, তারা রাস ইসা বন্দরে হুথিদের দখলে থাকা ‘গ্যালাক্সি লিডার’ নামের একটি জাহাজেও হামলা চালিয়েছে। হুথিরা ২০২৩ সালের শেষ দিকে জাহাজটি দখল করেছিল।
সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, হুথিদের ‘সন্ত্রাসী’ শাসন কাঠামোর বাহিনীগুলো জাহাজে একটি রাডার–ব্যবস্থা স্থাপন করেছে। এটি আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় নৌযান শনাক্তে ব্যবহার করা হচ্ছে। হুথিদের ‘সন্ত্রাসী’ শাসনব্যবস্থার কার্যক্রম প্রচারের জন্য এটি কাজে লাগানো হচ্ছে।
ইসরায়েলি হামলার পর হুথি সামরিক মুখপাত্র জানান, হুথিদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘ঘরে তৈরি বিপুল সংখ্যক ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েলি হামলার মোকাবিলা করেছে।’
হোদেইদা শহরের বাসিন্দারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বিমান হামলায় শহরের প্রধান বিদ্যুৎকেন্দ্র অকেজো হয়ে পড়েছে। যার ফলে পুরো শহর অন্ধকারে ডুবে গেছে।
হুথি-নিয়ন্ত্রিত আল-মাসিরাহ টিভি জানিয়েছে, ইসরায়েল হোদেইদায় একাধিক হামলা চালিয়েছে। এর আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ওই তিনটি ইয়েমেনি বন্দর থেকে সাধারণ জনগণকে সরে যাওয়ার জন্য সতর্কবার্তা জারি করেছিল।
এই হামলার কয়েক ঘণ্টা আগেই হোদেইদার উপকূলে একটি জাহাজে হামলা চালানো হয়। জাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পানিতে ডুবে যেতে শুরু করলে ক্রুরা তা ত্যাগ করে।
তবে এই হামলার দায় কেউ তাৎক্ষণিকভাবে স্বীকার করেনি। নিরাপত্তা সংস্থা অ্যামব্রে জানিয়েছে, হামলার শিকার হওয়া জাহাজটির প্রোফাইল সাধারণত হুথিদের লক্ষ্যবস্তু হওয়ার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।