ইউক্রেনের রাশিয়ার পাল্টা হামলা শেষ হয়নি, বড় হামলার শঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রের

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা মনে করছেন, বোমারু ঘাঁটিতে ইউক্রেনের ড্রোন হামলার জবাবে রাশিয়ার আসল প্রতিশোধমূলক আঘাত এখনও শুরু হয়নি। তারা বলছেন, রাশিয়া সম্ভবত শিগগিরই একটি বহুমাত্রিক ও বড় পরিসরের হামলা চালাতে যাচ্ছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া বক্তব্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পাল্টা হামলার হুমকি দিলেও, এখনও পর্যন্ত তা পূর্ণ মাত্রায় ঘটেনি।

এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, রাশিয়ার আসন্ন হামলা ইউক্রেনীয় হামলার মতো হবে না। আরেকজন জানান, এই আঘাতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনসহ বিভিন্ন ধরনের বিমান হামলা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

গত শুক্রবার কিয়েভে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। তাদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, ইউক্রেনের কথিত সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জবাবে সামরিক ও সামরিক-সম্পর্কিত স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানা হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে, এ হামলা রাশিয়ার পূর্ণ প্রতিক্রিয়া নয়।

পশ্চিমা এক কূটনৈতিক সূত্র জানায়, রাশিয়া ইতোমধ্যে হামলা শুরু করলেও তা ধীরে ধীরে আরও প্রবল হয়ে উঠবে। তারা ইউক্রেনের প্রতীকী স্থাপনাগুলো—যেমন সরকারি ভবন—লক্ষ্য করে কিয়েভকে বার্তা দিতে চায়।

এক জ্যেষ্ঠ পশ্চিমা কূটনীতিক বলেন, এটি হবে বিশাল, নির্মম এবং একটানা চলা এক হামলা। কিন্তু ইউক্রেনীয়রা সাহসী জাতি।

গত সপ্তাহে ইউক্রেন একটি সাহসী ড্রোন হামলা চালায় রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটিতে। কিয়েভ জানায়, “স্পাইডার’স ওয়েব” কোডনামে পরিচালিত ওই অভিযানে ১১৭টি ড্রোন ব্যবহার করা হয়, যার অনেকগুলো রাশিয়ার অভ্যন্তরে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এ হামলায় রাশিয়ার অন্তত ২০টি যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাদের মধ্যে ১০টি পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। যদিও রাশিয়া বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, কোনও বিমান ধ্বংস হয়নি এবং ক্ষয়ক্ষতি মেরামত করা হবে। তবে রুশ সামরিক ব্লগারদের অনেকে অন্তত ডজনখানেক বিমান ধ্বংস বা গুরুতর ক্ষতির কথা স্বীকার করেছেন, যেগুলোর কিছু পারমাণবিক অস্ত্রবাহী বিমানও ছিল।

কারনেগি এন্ডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস-এর রাশিয়া বিশ্লেষক মাইকেল কফম্যান বলেন, ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা এসবিইউর ওপর রাশিয়া পাল্টা হামলা চালাতে পারে। তিনি বলেন, এসবিইউ সদর দফতর বা আঞ্চলিক গোয়েন্দা কার্যালয়গুলো লক্ষ্যবস্তু হতে পারে। এমনকি প্রতিরক্ষা শিল্পের স্থাপনাগুলোও হামলার আওতায় আসতে পারে।

তবে কফম্যান মনে করেন, রাশিয়ার হামলার পরিসর বড় হলেও তাদের হামলার সামর্থ্য অনেকটাই সীমিত। তিনি  বলেন, গত এক মাস ধরেই রাশিয়া আক্রমণ জোরদার করেছে। এখন তাদের হাতে অতিরিক্ত কিছু করার মতো সামর্থ্য সীমিত।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, বুধবার পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন তিনি। সেখানেই পুতিন বলেন, মস্কো এই হামলার জবাব দেবে। পরে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, আমি বলেছি, ‘তুমি এটা কোরো না, এটা বন্ধ করা উচিত।’ কিন্তু ঘৃণা এখন অনেক গভীরে গেঁথে গেছে।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের ওয়াশিংটনস্থ দূতাবাস এবং হোয়াইট হাউজ থেকে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।