জোট সরকার গঠনের আলোচনা ভেস্তে যাওয়ায় রাজনৈতিক সংকটে জার্মানি

নতুন জোট সরকার গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ায় নতুন রাজনৈতিক সংকটে পড়েছে জার্মানি। ফলে দেশটির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেলের সরকারের পতন হতে পারে। এ সংকট সমাধানে  সংখ্যালঘু সরকার অথবা নতুন নির্বাচন আয়োজন ছাড়া কোনও বিকল্প নেই ম্যার্কেলের সামনে।

জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেল

২৪শে সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে কোনও দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। ফলে চারটি দল মিলে জোট সরকার গঠনের জন্য প্রায় চার সপ্তাহ ধরে আলোচনা চালিয়ে আসছিল।  এ আলোচনায় তাদের মধ্যে একাধিক বিষয়ে পরস্পরবিরোধী অবস্থান তৈরি হয়।  তবে ম্যার্কেল-এর ইউনিয়ন শিবিরের দুটি দল ও সবুজ দল জানিয়েছে, রবিবার গভীর রাতে সব পক্ষ ঐকমত্য অর্জনের খুব কাছাকাছি চলে এসেছিল। কিন্তু উদারপন্থী এফডিপি দল এককভাবে আলোচনা ছেড়ে বেরিয়ে আসে। ফলে জোট সরকার গঠনের প্রক্রিয়া বানচাল হয়ে গেল৷

এই অবস্থায় বিভিন্ন সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনাকল্পনা চলছে। এসপিডি দল যদি আবার মহাজোট গঠনে সম্মত হয়, সে ক্ষেত্রে স্থিতিশীল সরকার গঠন করা সম্ভব হবে। অথবা সংখ্যালঘু সরকার গঠনের সুযোগ থাকবে। এ ক্ষেত্রে ম্যার্কেল-এর ইউনিয়ন শিবির হয় এফডিপি কিংবা সবুজ দলের সঙ্গে জোট সরকার গঠন করতে পারে। তবে এমন সরকার চালু রাখতে বিরোধী পক্ষের কিছু সমর্থনের প্রয়োজন হবে। সংবিধান অনুযায়ী নতুন করে নির্বাচন ডাকতে হলে জার্মান প্রেসিডেন্টকে আগে চ্যান্সেলরের নাম প্রস্তাব করতে হবে। তিনি যদি ম্যার্কেল হন, তাকে সংসদে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে। অথবা প্রেসিডেন্ট সংসদ ভেঙে নতুন নির্বাচনের ঘোষণা করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷

এমন প্রেক্ষাপটে সোমবার সকালে ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিচ্ছে। নতুন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দল নিজেদের অবস্থান জানাতে চলেছে। তবে সব চেয়ে বেশি চাপের মুখে পড়েছেন এফডিপি দলের শীর্ষ নেতা ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার। আলোচনা ভেঙে দেওয়ার ফলে তাকে নিজের আচরণের ব্যাখ্যা দিতে হবে। আলোচনা ত্যাগের কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন,  ম্যার্কেলের কনজারভেটিভ দল ও তার সহযোগী সিডিইউ-সিএসইউ এবং পরিবেশবিদ গ্রিন কোয়ালিশনকে “বিশ্বাস ও আস্থায় আনা সম্ভব নয়”। লিন্ডার বলেন, ‘কু-শাসন করার চেয়ে শাসন না করার পদক্ষেপ উত্তম’।  

ম্যার্কেলের কোয়ালিশন সদস্য গ্রিন পার্টির পক্ষে বলা হয়েছে, মতের ভিন্নতা সত্ত্বেও দেশটির কথা ভেবে যে কোনও সমঝোতা সম্ভব। জার্মানির চ্যান্সেলর নতুন সরকার গঠনের আলোচনা ভেস্তে যাওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি এ সংকটের মধ্যেও ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির হাল ধরার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

ম্যার্কেল বলেন, ‘চ্যান্সেলর হিসেবে জার্মানির এ কঠিন সময়ে দেশের ভাল নিশ্চিত করতে আমি আমার সাধ্যমত সবকিছু করবো।’ সূত্র: ডয়চে ভেলে, বিবিসি।