জার্মানির গুরুত্বপূর্ণ সীমান্তে সোমবার থেকে কড়াকড়ি

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের বিস্তাররোধে সীমান্ত বন্ধ না করার ঘোষণা দিলেও শেষপর্যন্ত জার্মানির গুরুত্বপূর্ণ সীমান্তে কড়াকাড়ি ও নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া শুরু হয়েছে। জার্মান সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, দেশটির স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ৮টা থেকে ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রিয়া সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে। তবে নিয়মিত যাত্রী ও পণ্য পরিবহন চালু থাকবে। পর্যটনের জন্য বা জরুরি কোনো প্রয়োজন ছাড়া কাউকে এসব সীমান্ত দিয়ে জার্মানিতে ঢুকতে দেওয়া হবে না।

germany

১৫ মার্চ পর্যন্ত জার্মানিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৬২০ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের আর সুস্থ হয়েছেন ৪৬ জন। করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিলেও সীমান্ত বন্ধ করবেন না বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। কিন্তু এই ঘোষণার কয়েকদিনের মধ্যে জার্মানিও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিলো।

জার্মান সংবাদমাধ্যম বিল্ডকে উদ্ধৃত করে ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হোর্স্ট সেহোফার, ফেডারেল স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েনস স্পাহন, বাভারিয়া রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী মার্কুল স্যোডার, বাডেন-ভ্যুর্টেমবের্গের প্রধানমন্ত্রী ভিনফ্রিড ক্রেটশমান, সানল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী টোবিয়াস হান্স এবং রাইনলান্ড-পালাটিনেট রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী মালু ড্রেয়ারের সঙ্গে টেলিফোন কনফারেন্সে কথা বলেন চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল।

কেবল করোনা সংক্রমণ নয়, অন্য দেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের কেনাকাটা ঠেকানোও এ সিদ্ধান্তের অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করেছে বিল্ড। ভবিষ্যতে আরও কড়াকড়ি এমন কি সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্তও নিতে পারে কর্তৃপক্ষ।

ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য দেশগুলোর সীমান্তে সাধারণত কোনও কড়াকড়ি থাকে না। তবে এরই মধ্যে ইইউ সদস্য বেশ কয়েকটি দেশ নিজেদের সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করেছে।  

এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন প্রতিবেশী তিন দেশের সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করবে পুলিশ ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। ধারণা করা হচ্ছে, সীমান্ত পেরোনোর সময় কাগজ পরীক্ষা করে অনেককেই জার্মানিতে প্রবেশ করতে না দিয়ে ফেরত পাঠানো হবে।

জার্মান সংবাদমাধ্যম স্পিগেল জানিয়েছে, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ডয়চে বান বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে ট্রেন চলাচলেও কড়াকড়ি আরোপ করছে। কমিয়ে আনা হচ্ছে ট্রেন চলাচলের হার, চালু হয়েছে বিশেষ শিডিউল। সোমবার থেকে বনসহ বিভিন্ন শহরে বাসে টিকেট বিক্রি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। চালককে নিরাপদ রাখতে বন্ধ থাকবে বাসের সামনের দরজাও। কেবল পেছনের দরজা দিয়ে বাসে উঠতে পারবেন যাত্রীরা।

এরই মধ্যে করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে বিভিন্ন রাজ্য ও শহর নিজেদের মতো করে ব্যবস্থা নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া, সুইমিং পুল, ব্যায়ামাগারসহ নানা গণজমায়েতের স্থান বন্ধ করে দেওয়া। অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বাসা থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে।