অভিবাসীদের অস্ট্রিয়া পাঠাচ্ছে জার্মানি

চলতি বছরের শুরু থেকে অভিবাসীদের অস্ট্রিয়া ফেরত পাঠাচ্ছে জার্মানি। প্রতিদিন এ সংখ্যা বাড়ছে। ইংরেজি নববর্ষ উৎসবে যৌন হামলার পর থেকেই জার্মানি এ পদক্ষেপ নিচ্ছে। অস্ট্রিয়া পুলিশের বরাত ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

অস্ট্রিয়া পুলিশ জানায়, যাদের কোনও বৈধ কাগজপত্র নেই এবং জার্মানিতে যারা শরণার্থী হতে চায় না তাদেরকে অস্ট্রিয়া পাঠাচ্ছে জার্মানি। ইতোমধ্যে যাদেরকে অস্ট্রিয়া পাঠানো হয়েছে তাদের সিরীয় কেউ নেই। সিরীয়দের বেশিরভাগই জার্মানিতে শরণার্থী হওয়ার আবেদন করেছেন। অস্ট্রিয়া পাঠানো অভিবাসীদের মধ্যে আফগানিস্তান, মরক্কো ও আলজেরিয়ার নাগরিকরা রয়েছে।

অস্ট্রিয়ার উপার রাজ্যের পুলিশ মুখপাত্র ডেভিড ফার্টনার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘প্রতিদিন জার্মানি থেকে আসা অভিবাসীদের সংখ্যা বাড়ছে। ডিসেম্বরে এ সংখ্যা ছিল ৬০ জন। নতুন বছরের শুরুতে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০০ জনে।’

গত সপ্তাহে অভিবাসীদের অন্যতম গন্তব্য সুইডেন ডেনমার্ক থেকে আসা ভ্রমণকারীদের ওপর কড়াকাড়ি আরোপ করে।

বর্ষবরণে চালানো যৌন সন্ত্রাসের ঘটনায় অভিবাসীদের দায়ী করছে জার্মানির ডানপন্থীরা। রবিবার দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় একটি শহরে হামলার শিকার হন ছয় পাকিস্তানি ও এক সিরীয় নাগরিক। মূলত ওই ঘটনায় অভিবাসীদের ওপর চলমান ক্ষোভের শিকার হন তারা।

২০১৫ সালে জার্মানিতে প্রবেশ করেছেন প্রায় ১১ লাখ অভিবাসন-প্রত্যাশী। কিন্তু বর্ষবরণের ওই অপ্রীতিকর ঘটনার পর সমালোচনার মুখে পড়েছে অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের অভিবাসীবান্ধব নীতি। গত শনিবারেও ইসলাম বিরোধী পেগিডা মুভমেন্ট-এর নেতৃত্বে কোলনে অভিবাসন-বিরোধী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বর্ষবরণ উৎসবে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেল। ওই ঘটনায় জড়িতদের দেশ থেকে বিতাড়িত করার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।

মেরকেল বলেন, তাদের (বহিরাগতদের) জার্মানির আইন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা উচিত। আর সে কারণেই এই ঘটনায় জড়িতদের জার্মানি থেকে বিতাড়িত করা হবে। বর্ষবরণের উৎসবে যা হয়েছিল, তা মোটেই কাম্য নয়।

গত ৩১ ডিসেম্বর রাতে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে কোলন সিটি সেন্টার ও এর আশেপাশের এলাকায় প্রচুর মানুষ জড়ো হন। ভিড়ের সুযোগে কোলন স্টেশন ও সিটি সেন্টারের মাঝামাঝি জায়গায় একদল তরুণ নারীদের ওপর যৌন নির্যাতন চালায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে কোলন পুলিশ জানায়, ভিড়ের মধ্যে থাকা প্রায় এক হাজার পুরুষের একটি দল এ ঘটনার জন্য দায়ী। তাদের অনেকে মদ্যপ এবং দেখতে ‘আরব ও উত্তর আফ্রিকানদের মতো’ ছিলেন।

এদিকে, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজন ৩১ আশ্রয়প্রার্থীর মধ্যে ১৮ জনকে শনাক্ত করেছে জার্মান কর্তৃপক্ষ।

/এএ/