নির্বাচনে পরাজয়, দলেই সমর্থন হারাচ্ছেন লাশেট

জার্মানির সংসদ নির্বাচনে ঐতিহাসিক বিপর্যয়ের পর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেলের ইউনিয়ন শিবিরের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী আরমিন লাশেট প্রবল চাপের মুখে পড়েছেন। তার ‘উদ্ধত মনোভাবে’ অনেক নেতা বিরক্তি প্রকাশ করছেন। সমর্থন হারাচ্ছেন নিজ দলেই।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে’র খবরে বলা হয়েছে, ঘরে-বাইরে প্রচণ্ড চাপের মুখে রয়েছেন আরমিন লাশেট। শিবিরের মধ্যে নেপথ্যে ও প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে সমালোচনা বেড়ে চলেছে। নির্বাচনের ফলাফল স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পরেও তিনি যেভাবে সরকার গড়ার দাবি করেছিলেন, সেই বিষয়টি দলের অনেক নেতা-কর্মী মোটেই ভালো চোখে দেখছেন না।

নির্বাচনে কার্যত ভরাডুবির পর এবং শিবির তালিকার দ্বিতীয় স্থানে নেমে যাওয়া সত্ত্বেও লাশেটের ‘ঔদ্ধত্য' অনেকের বিরক্তির কারণ হয়ে উঠেছে। শিবিরের ঐতিহাসিক নির্বাচনি বিপর্যয়ের পর চাপের মুখে তিনি পিছিয়ে গিয়ে ‘দেশের প্রয়োজনে' জোট সরকার গড়ার চেষ্টার কথা বলেছেন। অর্থাৎ নির্বাচনে জয়ী এসপিডি দল জোট গঠনে ব্যর্থ হলে তবেই তিনি সেই প্রচেষ্টা চালাতে চান। তবে স্পষ্ট ভাষায় হার স্বীকার এবং জয়ের জন্য এসপিডি দল বা দলের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী আরমিন লাশেটকে অভিনন্দন জানানোর সৌজন্যও তিনি দেখাননি।

সিডিইউ ও সিএসইউ দলের একাধিক নেতা লাশেটের এমন আচরণের তীব্র সমালোচনা করছেন। তাদের মতে, সবার আগে বিনীত মনোভাব দেখিয়ে ভোটারদের রায় শ্রদ্ধার সঙ্গে মেনে নেওয়া উচিত।

হেসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ফল্কার বুফিয়ে বলেছেন, এই ফলাফলের পর ইউনিয়ন শিবিরের সরকার গড়ার দায়িত্ব নেওয়ার  কোনও সুযোগ নেই। দলের যুব শাখার প্রধান টিলমান কুবান বলেন, ‘আমরা নির্বচনে হেরে গেছি। ব্যস, আর কিছু বলার নেই।’ তার মতে, সরকার গড়ার দায়িত্ব এখন এসপিডি, সবুজ দল ও এফডিপি দলের কাঁধে বর্তায়।

এসপিডি দলের নেতারাও লাশেটের ‘ঔদ্ধত্য' সম্পর্কে বিরক্তি প্রকাশ করছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক লার্স ক্লিংবাইল বলেন, ‘কেউ আরমিন লাশেটকে চ্যান্সেলর হিসেবে চায় না। আশা করি আগামী কয়েক দিনে তিনিও তা উপলব্ধি করবেন।’

উল্লেখ্য, সোমবার প্রকাশিত এক জনমত সমীক্ষায় ৭১ শতাংশ মানুষ লাশেটের সরকার গড়ার উদ্যোগের বিরোধিতা করেছেন।

এমন প্রেক্ষাপটে ইউনিয়ন শিবিরের মধ্যে লাশেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে। ইউনিয়ন শিবিরের কয়েকজন নেতা সরাসরি অথবা পরোক্ষভাবে দলের নেতা হিসেবে লাশেটের অপসারণের ডাক দিচ্ছেন। নির্বাচনে রেকর্ড মাত্রার বিপর্যয়ের পর তারা দলের নেতৃত্ব ও কর্মসূচি ঢেলে সাজানোর ডাক দিয়েছেন। লাশেটের নিজের দলের নেতা ও প্রতিদ্বন্দ্বী নরবার্ট রোটগেন সবার আগে নির্বাচনি ফলাফলের বিশ্লেষণের পর ব্যক্তি ও পদের বিষয়ে সিদ্ধান্তের পক্ষে সওয়াল করেছেন। সূত্র: ডয়চে ভেলে