‘বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাতে বড় বিনিয়োগে আগ্রহী রিলায়েন্স ও আদানি’

 

হর্ষবর্ধন শ্রিংলাবাংলাদেশের জ্বালানি খাতে বড় আকারে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে ভারতের বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আদানি পাওয়ার ও রিলায়েন্স পাওয়ার। বাংলাদেশে নিয়োজিত ভারতের হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা দ্য হিন্দু বিজনেস লাইনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন তথ্য জানিয়েছেন। আগামী ৭-১০ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর উপলক্ষে এ সাক্ষাৎকার দেন তিনি।

শেখ হাসিনার ভারত সফর দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও গভীর করার ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায় বলে বিবেচিত হবে বলে মনে করেন হর্ষবর্ধন।

ভারতের অর্থনীতিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম বিজনেস লাইনের পক্ষ থেকে হর্ষবর্ধনের কাছে প্রস্তাবিত বিনিয়োগ পরিকল্পনার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভারতের সরকারি-বেসরকারি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী। রিলায়েন্স একটি ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ)-এর এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) ব্যবহার করে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায়। এ প্রকল্পের অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে মেঘনাঘাটের জন্য ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়টি অনুমোদিত হয়েছে। আর ঝাড়খন্ডে স্থাপিত হতে যাওয়া দু’টি ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে যাওয়া ট্রান্সমিশন লাইন ব্যবহার করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে চায় আদানি। পেট্রোনেট, আইওসিএল এবং নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেডের মতো সরকারি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের তেল ও গ্যাস খাতের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছে। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে আদানি গ্রুপ ও রিলায়েন্স এডিএজি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, এলএনজি এবং বন্দর খাতে ১১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার আগ্রহের কথা ঘোষণা করেছিল।’

ভারতের আগের বিনিয়োগগুলো নিয়ে বাংলাদেশ সন্তুষ্ট কিনা সে ব্যাপারে হর্ষবর্ধনের কাছে বিজনেস লাইনের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়। তখন হর্ষবর্ধন জানান, ‘বাংলাদেশের বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ভারতের নিবন্ধিত মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। টাটা মোটরস, হিরো মোটোকর্প, সান ফার্মা, গোদরেজ, ভিআইপি, সিইএটি টায়ারস, ডাবুর, এয়ারটেল, আদিত্য বিরলা সিমেন্ট-এর মতো কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে উৎপাদনের চুক্তির বন্দোবস্ত করছে। ভারত থেকে আরও বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রিলায়েন্স ও আদানির তৈরি করা বিনিয়োগ প্রস্তাব। অর্থনেতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য বিশেষ করে ভারতীয় কোম্পানিগুলোর জন্য দু’টি এলাকা ঠিক করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।’

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে মনে করেন হর্ষবর্ধন। ওই সফরে উন্নয়নমূলক পারস্পরিক সহযোগিতার পাশাপাশি আইটি, আইটিইস, সাইবার নিরাপত্তাসহ উচ্চ প্রযুক্তিগত খাতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১৫ সালের জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে যৌথভাবে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর কতটুকু অগ্রগতি হলো সে ব্যাপারে পর্যালোচনা করার সুযোগ মিলবে বলে মনে করেন হর্ষবর্ধন।

/এফইউ/এমএনএইচ/