ভারতের দিল্লিতে ফের সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যা

মেয়েটির দেহ যেখানে ফেলে রাখা হয়েছিল সেই স্থানটি পরিদর্শন করছেন তদন্তকারীরাভারতের দিল্লিতে আবারও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে এক তরুণীকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডটি পাঁচ বছর আগে চলন্ত বাসে নির্ভয়াকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহতাকেও হার মানিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।

রাজধানী দিল্লি থেকে মাত্র ২৭ মাইল দূরে হরিয়ানার সোনপটের গ্রামে এই ভয়াবহ ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ভারতের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর অনেকেই শিউরে উঠেছেন। কিন্তু নির্ভয়া কাণ্ডের পর যেমন ভারতজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় দেখা গিয়েছিল এবার তেমন প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে, বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ওই মেয়েটিকে অপহরণ করে প্রথমে মাদক খাইয়ে অচেতন করে ফেলা হয়। তারপর মেয়েটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। এক পর্যায়ে মেয়েটি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর কথা বলেন। তখন ইঁট দিয়ে মেরে তার মাথা ও মুখ থেঁতলে দেওয়া হয় যাতে মৃতদেহটি কেউ শনাক্ত করতে না-পারে। এরপর ধর্ষণকারীরা মেয়েটির মৃহদেহটি তাদের গাড়ি দিয়েও পিষে ক্ষতবিক্ষত করে দেয়। লাশ ফেলে যায় গ্রামের একটি পরিত্যক্ত জায়গায়। চারদিন ধরে মৃতদেহটি ছিন্নভিন্ন অবস্থায় ওভাবেই পড়ে ছিল। গ্রামবাসীদের চোখে যখন মৃতদেহটি চোখে পড়ে, ততদিনে রাস্তার কুকুর মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশ খুবলে খেয়ে নিয়েছে।

ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা আরও নৃশংসতার প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন রোহটাক মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান এস কে ধাত্তরওয়াল।

এই ঘটনায় হরিয়ানার পুলিশ এখনও পর্যন্ত দুজনকে গ্রেফতার করেছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আরও ছয়জনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে বলেও জানিয়েছেন রোহটাকের পুলিশ প্রধান অশ্বিন শেনভি।

ধর্ষণের শিকার মেয়েটির বাবা জানিয়েছেন, যখন তারা মেয়ের মৃতদেহ দেখতে পান তা  দিল্লিতে 'নির্ভয়া' নামে পরিচিত মেয়েটির দেহের চেয়েও আরও অনেক খারাপ অবস্থায় ছিল।

মেয়েটির মা জানান, মাত্র সপ্তাহখানেক আগেই যখন সুপ্রিম কোর্ট নির্ভয়ার হত্যা ও ধর্ষণে অভিযুক্তদের ফাঁসির সাজা দেয় তখন গ্রামে সবাই বলাবলি করছিল এরপর লোকে ধর্ষণ করতে যাওয়ার আগে দুবার ভাববে। তিনি বলেন, 'কিন্তু এখন বোঝা যাচ্ছে মানুষ আসলে কতটা বেপরোয়া। মেয়েরা এখনও কত বড় বিপদের সামনে'।

গ্রেফতারকৃতদের একজনের নাম সুমিত। সে ওই মেয়েটিকে ভালবাসত বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছে। কিন্তু মেয়েটি বিয়েতে রাজি না হওয়ার কারণেই অপহরণের পর ধর্ষণের পরিকল্পনা করার কথা স্বীকার করেছে সুমিত।

হরিয়ানা পুলিশের এক সিনিয়র কর্মকর্তা মহম্মদ আকিল জানান, এই মামলার দ্রুত তদন্তের জন্য তারা একটি স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা 'সিট' গঠন করেছেন। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

/এএ/