ভারত-মিয়ানমার যৌথ সামরিক মহড়া চলছে মেঘালয়ে

 

মেঘালয়ে ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে প্রথম যৌথ সামরিক মহড়া শুরু হয়েছে।  সোমবার (২০ নভেম্বর) থেকে এ মহড়া শুরু হয়েছে। চলবে এক সপ্তাহ ধরে। মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরের একটি এলাকায় এ মহড়া চলছে।

মেঘালয়ে চলছে ভারত-মিয়ানমার যৌথ সামরিক মহড়া

মহড়ায় মিয়ানমারের ১৫ ও ভারতের ১৬ জন সেনা কর্মকর্তা অংশ নিচ্ছেন। ভারতীয় সেনা মুখপাত্র লে. কর্নেল সুমিত নিউটন সাংবাদিকদের বলেন, দক্ষতা ও কৌশল বিনিময়ই এই যৌথ মহড়ার মূল উদ্দেশ্য।একই সঙ্গে পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে উভয় বাহিনী নিজেদের মধ্যে বন্ধুত্বকে আরও সুদৃঢ় করতে চায়।

জঙ্গি দমনের বিভিন্ন কৌশল এই মহড়ায় বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে। প্রযুক্তির পাশাপাশি কৌশলও থাকছে সেনা কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের তালিকায়। উভয় দেশের সেনা কর্মকর্তারাই পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে উপকৃত হবেন বলেও দাবি করেন মুখপাত্র। 

ভারতের রেড হর্ন ডিভিশনের মেজর জেনারেল পিএস বেল জিওসি জানান, শান্তিরক্ষায় ভারত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তিনি বলেন, মিয়ানমার শান্তি মিশনে নতুন। তারা এসব অভিযানে অংশ নিতে চায়। এখানে আমাদের সঙ্গে প্রশিক্ষণে তারা শিখতে এসেছে।

উভয় দেশের বাহিনীর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ‘দৃঢ়’ উল্লেখ করে বেল জানান, ভারতীয় সেনাবাহিনী সবচেয়ে ভালো বন্ধু এবং এর আগেও প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা আশাকরি  বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

মিয়ানমার জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে অংশ নিতে চায় বলেই এই প্রশিক্ষণের আয়োজন বলে জানান এই ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর পক্ষে নেতৃত্ব দেওয়া কর্নেল অং কিয়াউ জানান, যৌথ সামরিক মহড়ায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী উপকৃত হবে। তিনি বলেন, এটা ভারত-মিয়ানমারের মধ্যে প্রথম সামরিক মহড়া। আমরা তাদের (ভারতীয় সেনাবাহিনী) কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারব। আমাদের বন্ধু ভারতীয় সেনাবাহিনী মিয়ানমারেও এমন মহড়ায় অংশ নেবে বলে আমরা আশা রাখি।

মিয়ানমারের সঙ্গে সামরিক মহড়ায় অংশ নেওয়ায় ভারতের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। সমালোচকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো যখন রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর হত্যা-নির্যাতনের দায়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানাচ্ছে ঠিক তখনি যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়ে অপরাধীদেরকে আরও শক্তিশালী করছে ভারত।

গত ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন প্রদেশের রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান জোরদার করেছে। এ পর্যন্ত রাখাইন থেকে ছয় লক্ষাধিক রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘ মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞের অভিযোগ এনেছে। তবে মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আমন্ত্রণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রও সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব বিবেচনা করছে। তবে ভারত ও চীন রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানকে সমর্থন জানিয়েছে। সূত্র: শিলং টাইমস, পার্স টুডে।