ভারতকে শীর্ষ অস্ত্র রফতানিকারকদের কাতারে নিতে চান মোদি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৃহস্পতিবার দশম আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা প্রদর্শনীতে দেওয়া বক্তব্যে ভারতকে শীর্ষ অস্ত্র রফতানিকারকদের কাতারে নেওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন। লক্ষ্য বাস্তবায়নে ‘ইনোভেশন ফর ডিফেন্স এক্সিলেন্স’ শীর্ষক পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন তিনি। ওই পরিকল্পনা অনুযায়ী, দেশি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম খাতে নতুন উদ্যোগকে সহায়তা দিতে কাজ করবে সরকার। অনুষ্ঠানে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন,  কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট সরকারে থাকার সময়ে প্রতিরক্ষা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে স্থবিরতা দেখিয়েছে। expo

ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস তাদের প্রতিবেদনে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে উল্লেখ করছে, চেন্নাইতে শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা প্রদর্শনীতে ৬৭০টি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এদের মধ্যে ৫০০টিই ভারতের স্থানীয় প্রতিষ্ঠান। প্রদর্শনীতে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত তেজস জঙ্গিবিমান, অত্যাধুনিক কামান (এটিএজিএস), অর্জুন ট্যাংক, ধনুশ কামান, নির্ভয় ক্ষেপণাস্ত্র, বহনযোগ্য রাডার ব্যবস্থা, ভারুনাস্ত্র ডুবোজাহাজধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রসহ অন্যান্য প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম প্রদর্শিত হয়েছে।

প্রতি দুইবছর পর পর অনুষ্ঠিত হওয়া আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা প্রদর্শনীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট ক্ষমতায় থাকাকালে প্রতিরক্ষাবিষয়ক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে শৈথিল্য দেখিয়েছে। তার দাবি, বিজেপির সরকার ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছে। সৈন্যদের জন্য ১ লক্ষ ৮৬ হাজার বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত করেছে বর্তমান সরকার। টাইমস অফ ইন্ডিয়া তাদের প্রতিবেদনে মোদির এই দাবির কথা উল্লেখ করেছে। ভারত সম্প্রতি ১১০টি জঙ্গিবিমান কেনার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। তবে তারা শর্ত দিয়েছে, বিমানগুলোর সিংহভাগ নির্মাণ প্রক্রিয়া ভারতেই করতে হবে। ভারত প্রত্যাশা করে, এর মধ্য দিয়ে তারা যুদ্ধবিমান তৈরিতে অনেকটাই স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারবে। যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লকহিড মার্টিন জানিয়েছে, তারা তাদের এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান উৎপাদনের পুরো ব্যবস্থাপনা ভারতে নিয়ে চলে যেতে ইচ্ছুক। সেখান থেকেই তারা ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য এফ-৩৫ বিমান উৎপাদন করতে চায়।

দেশটিতে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনে গতিশীলতা আনতে তামিলনাড়ু ও উত্তর প্রদেশে 'প্রতিরক্ষা শিল্পাঞ্চল' স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে দেশটি। তাছাড়া প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনে বৈদেশিক বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার কথাও জানিয়েছন মোদি। ভারত বর্তমানে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে ৪৯ শতাংশ বিদেশি মালিকানা থাকার অনুমতি দেয়। মোদি জানিয়েছেন, ভারত গত বছর ১১৮টি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানির আবেদন অনুমোদন করেছিল, যার আর্থিক মূল ছিল ৩০০ কোটি রুপি। ভারতের বর্তমান সরকার মোট ৮৫০ কোটি রুপির প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানির অনুমতি দিয়েছে। প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার মুখে যাতে না পড়তে হয় সে বিষয়টিও সে দেশের সরকারের নজরে আছে, জানিয়েছেন মোদি।