ভারতে গরু পাচারের অভিযোগে আবারও একজনকে হত্যা

 গরু পাচারের অভিযোগে ভারতে হিন্দুত্ববাদীদের হাতে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ব্যক্তির নাম আকবর। তিনি রাজস্থান থেকে দুইটি গরু নিয়ে তার বাড়ি হরিয়ানায় যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে পাঁচ থেকে সাত জনের একটি দল তাকে ঘিরে ফেলে এবং গরু পাচারের অভিযোগ তুলে তাকে গণধোলাই দেয়। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান লিখেছে, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টি ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটিতে গোরক্ষকদের দৌরাত্ম বৃদ্ধি পেয়েছে।

cow_slaughter2_20100720

শনিবার গোরক্ষকদের হামলার শিকার হওয়া আকবরকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। পথ্যিমধ্যে তিনি জানান, পাঁচ থেকে সাত জনের গোরক্ষকদের একটি দল তাদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। আকবরের সঙ্গে তার একজন বন্ধুও ছিলেন, যিনি পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে ২৮ বছর বয়সী আকবরের মৃত্যু হয়। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা বসুন্ধরা রাজে বলেছেন, ‘দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।’

উল্লেখ্য, মোদি সরকার ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর থেকেই গরু নিয়ে বিভিন্ন গুজব তুলে মুসলিমদের ওপর হিন্দুত্ববাদী নিপীড়ন-নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড শুরু হয়। ২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বরে ভারতের উত্তর প্রদেশের দাদরি এলাকায় গরুর মাংস সংরক্ষণের গুজবে মোহাম্মদ আখলাককে পিটিয়ে হত্যা করে গ্রামবাসী। এর ধারাবাহিকতায় এখনও সেখানে গরুকে হিন্দুত্ববাদী অস্ত্র বানিয়ে মুসলিম নিপীড়ন অব্যাহত রয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে, শুধু মুসলমানরা নয়, খ্রিস্টান অধ্যুষিত মেঘালয়েও গরুর মাংস খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অধিকার কর্মীরা অভিযোগ জানিয়ে বলেছেন, গোরক্ষকদের নিন্দায় মোদি সরকার অনিচ্ছুক। আর পুলিশও তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয় না।

২০১৭ সালের এপ্রিল মাসেও গোরক্ষকদের হাতে পেহলু খান খান নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়। দুইটি গরু ও দুইটি বাছুর নিয়ে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে কৃষক পেহলু খান হিন্দুত্ববাদী গোরক্ষকদের হামলার শিকার হন এবং তাদের পিটুনিতে মৃত্যুবরণ করেন।