বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য ৯০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে

২০১৭-১৮ অর্থ বছরটি বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রকে উদ্ধৃত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন বলছে, এ অর্থ বছরে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যের পরিমাণ ৯০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। একই সময়ে তৈরি পোশাক খাতকে ভিত্তি করে ভারতে বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ পৌঁছেছে ৯০ কোটি ডলারের কাছাকাছি। 

bl16diplomat

দ্য হিন্দু বিজনেস লাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১১ সালে দক্ষিণ এশীয় মুক্ত বাণিজ্য এলাকা চুক্তির (সাফটা) আওতায় ভারতে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেয় ভারত। তবে বাংলাদেশ ধীর গতিতে সুবিধাটি গ্রহণ করেছে। গত ছয় বছরে ভারতে বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ ৫১ কোটি ২০ লাখ ডলার থেকে বেড়ে ৬৭ কোটি ২০ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে।  

গত ১১ মাসে ভারতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি ১১৩ শতাংশ বেড়ে ১২ কোটি ৯০ লাখ ডলার থেকে ২৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারে উন্নীত হয়। এর পাশাপাশি মাছ ও পানীয়সহ বিভিন্ন বাংলাদেশি পণ্য ভারতে রফতানি হচ্ছে।

জিএসটি সুবিধা

২০১৭ সালের জুলাই থেকে জিএসটি সুবিধা চালু হয়। এর আওতায় পোশাক শিল্পের ওপর আরোপিত ১২ শতাংশ কাউন্টারভেইলিং শুল্ক (সিভিডি) প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। সিভিডির এ প্রত্যাহার নির্দিষ্ট করে শুধু বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য ছিল না, শুধু বাংলাদেশই এক্ষেত্রে একমাত্র সুবিধাপ্রাপ্ত দেশ নয়। বিজনেস লাইনের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, জিএসটি নিশ্চিতভাবে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রফতানিকারক দেশ বাংলাদেশের জন্য সুবিধাজনক হয়েছে। সম্প্রতি ৩২৮টি টেক্সটাইল পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক বাড়ানো হলেও তা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়নি।

দ্য হিন্দু বিজনেস লাইনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে আমদানির বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি (সিআইটিআই) এর মনযোগ আকর্ষণ করেছে। তারা এফটিএ সংশোধনের দাবি জানিয়েছে। বলেছে, ভারত যদি এফটিএ সংশোধন না করে তবে তারা একটি নিয়ন্ত্রণকারী ‘গেট’ খুলবে। তাদের অভিযোগ, মূল উৎসের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পর্যাপ্ত বিধান না রেখেই এফটিএ প্রণয়ন করা হয়েছে।

সিআইটিআই-এর প্রেসিডেন্ট সঞ্জয় জৈন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, চীনাদের নির্মিত ফাইবারভিত্তিক পোশাকগুলো বাংলাদেশ হয়ে ভারতে প্রবেশের ক্ষেত্রে এ ফাঁকফোকড়টি ব্যবহার করা হতে পারে।

ঢাকাভিত্তিক বিজনেস ইনটেলিজেন্স লিমিটেডের উদ্যোক্তা শাকিব কোরেশি বলেন, ‘এফটিএ-তে ন্যুনতম মূল্য সংযোজনের ধরন যুক্ত করা যেতে পারে। তবে সার্ক কার্য নির্বাহী পরিষদের সম্মতির ভিত্তিতেই কেবল এ ধরনের সংশোধন করা যাবে।’ ভারতের জন্য এখনই কোনও উদ্বেগের কারণ থাকার আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।