আমরা যেনো ভুলে যাওয়া দাস: শারজাহতে আটকে পড়া ভারতীয় নাবিকদের আকুতি

আরব আমিরাতের শারজাহতে আটকে পড়া আট নাবিকরা অভিযোগ করে বলেছেন, তাদেরকে এমন দাস হিসেবে দেখা হচ্ছে, যাদের কথা কারও মনে নেই। সহায়তার জন্য এগিয়ে আসছে না কেউ। দুবাইয়ের ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে পাওয়া সহায়তাকেও ‘অপ্রতুল’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন তারা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনোমিক টাইমস জানিয়েছে,  এসব ভারতীয় নাবিককে ২০১৬ সাল থেকে সেখানে থাকতে হচ্ছে। কারণ শারজাহ কর্তৃপক্ষ তাদের পাসপোর্ট ও নাবিক পরিচয়পত্র জব্দ করে রেখেছে।indian_sailors_33_months_mv_azraqmoiah__uae_sharjah_abandoned_tamil_nadu_andhra_pradesh_1547380847_725x725

ভারতের মুম্বাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান রাস্যিয়া শিপিং সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড, মেরিন সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড ও কৃষ্ণামুরুতাম এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড এসব নাবিকদের নিয়োগ করেছিল জাহাজে। এমভি আজরাকমোইয়াহ নামের জাহাজটিকে ২০১৬ সালের ১৫ এপ্রিল আটক করে আরব আমিরাত কোস্ট গার্ড।

আরব আমিরাতের ফেডারেল ট্রান্সপোর্ট অথরিটি সংশ্লিষ্ট জাহাজটির বানিজ্যিক কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। জাহাজে থাকা পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন এলাকার আট নাবিকের কাগজপত্রও জব্দ করেছে। সংশ্লিষ্ট আট ভারতীয় নাবিকরা সেখানে মানবেতর অবস্থায় রয়েছেন। তাদের সঙ্গে রয়েছেন অন্য দেশের দুই নাবিক। এদের একজন সুদানের, আরেকজন তানজানিয়ার।

জাহাজের ক্যাপ্টেন আয়াপান স্বোয়ামিনাথান মন্তব্য করেছেন, ‘অবস্থা এমন যেনো আমরা দাস, যাদেরকে ভুলে যাওয়া হয়েছে। আমরা এখানে মানবেতরভাবে বেঁচে আছি। বাড়ি ফিরতে পারছি না, কারণ কর্তৃপক্ষ আমাদের চাকরি থেকে বিদায়ের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও কাগজ দেয়নি। কয়েক মাস ধরে আমাদের বেতনও বকেয়া রয়েছে।’

সম্প্রতি তামিলনাড়ুতে হওয়া ঘূর্ণিঝড়ে ক্যাপ্টেনের পরিবার অত্যন্ত বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে। তার ঘরবাড়ি ঝরে উড়ে গেছে। স্বোয়ামিনাথান বেতন না পাওয়ায় তারা ভারতে থেকেও কঠিন অবস্থায় দিন পার করছেন। টাইমস অব ইন্ডিয়া এ বিষয়ে ‘শাহিন সাইদ’ নামের একজন মানবাধিকার কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, যিনি ‘জাস্টিস আপহেল্ড’ নামক সংস্থায়র সঙ্গে কাজ করেন। তিনি নাবিকদের সহায়তার চেষ্টা করবেন।

আটকে পড়া নাবিকদের অভিযোগ, দুবাইয়ে অবস্থিত ভারতীয় কনস্যুলেট যে ‘সহায়তা’ করছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। জানা গেছে, জাহাজের ব্যবস্থাপনা আবুধাবির এলিট ওয়ে সার্ভিসেস নামক প্রতিষ্ঠানের।