ভারতীয় বিমান বাহিনী পাচ্ছে অত্যাধুনিক মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা

ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিকে বহনকারী বিমানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিক্রি করতে যাচ্ছে। এই নতুন প্রযুক্তি বিমানে যুক্ত হলে ভারতের ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’ স্বয়ংক্রিয়ভাবে মধ্যপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা প্রতিরোধে সক্ষম হবে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে তাদের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিকে বহন করার কাজে ব্যবহারের জন্য দুটি নতুন বোয়িং ৭৭৭ বিমান কিনবে। মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যুক্ত করা হবে এসব বিমানে। মার্কিন সরকার মনে করে, সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি ভারতের কাছে বিক্রি করলেও তা এই অঞ্চলের সামরিক ভারসাম্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না।du95pbh8_air-india-hangar_625x300_07_February_19
যুক্তরাষ্ট্র ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ। দেশটি ভারতকে ইতোমধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সহযোগী হিসেবে গ্রহণ করেছে। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে ‘কমিউনিকেশন কম্প্যাটিবিলিটি অ্যান্ড সিকিউরিটি এগ্রিমেন্ট’ (কমকাসা) স্বাক্ষর করেছে।  ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে ‘স্ট্র্যাটেজিক ট্রেড অথরাইজেশন-১’ (এসটিএ-১) সহযোগী হিসেব গ্রহণ করেছে। যার অর্থ, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সহজে উচ্চ প্রযুক্তির সামরিক সরঞ্জাম কিনতে পারবে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতই একমাত্র এসটিএ স্বীকৃতি প্রাপ্ত দেশ। পুরো এশিয়া এসটিএ স্বীকৃতি পাওয়া দেশ মোট তিনটি। ভারত ছাড়া বাকি দুইটি দেশ হচ্ছে, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া।
ভারত তাদের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিকে বহনকারী বিমানে যে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যুক্ত করতে যাচ্ছে তার আনুষ্ঠানিক নাম ‘লার্জ এয়ারক্র্যফট ইনফ্রারেড কাউন্টার মেজার্স’ (এলএআইআরসিএম)। এতে যুক্ত থাকছে ‘সেলফ প্রোটেকশন স্যুইটস’ (এসপিএস)। এদের মূল্য ১৯ কোটি ডলার। গত বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিফেন্স সিকিউরিটি কোঅপারেশন এজেন্সি’ (ডিএসসিএ) মার্কিন কংগ্রেসকে ভারতের কাছে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিক্রির বিষয়ে জানিয়েছে। পেন্টাগন মন্তব্য করেছে, ‘এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানকে বহনকারী বিমানকে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী বিমানের সমান নিরাপদ করে তুলবে।’
এলএআইআরসিএম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যুক্ত হওয়া বিমান ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে অনেক বেশি সুরক্ষা দিতে সক্ষম। এটি অনেক আগে থেকেই ক্ষেপণাস্ত্র চিহ্নিত করতে পারে। ফলে নিরাপত্তা কর্মীরা প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য বেশি সময় পান। অন্যদিকে ভুলভাবে কোনও কিছুকে ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করার হার এলএআইআরসিএম খুব কম। ‘ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টসের’ ভাষ্য মতে, এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয়ভাবে মধ্যপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা প্রতিহত করতে সক্ষম। পাইলটকে শুধু জানিয়ে দেওয়া হবে, যে একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পুরো প্যাকেজে রয়েছে এসপিএসসহ দুইটি এএন/এএকিউ২৪(ভি)এন লার্জ এয়ারক্র্যাফট কাউন্টার মেজার্স (এলএআইআরসিএম), এএলকিউ-২১১(ভি)৮ অ্যাডভান্সড ইন্টিগ্রেটেড ডিফেন্সিভ ইলেক্ট্রনিক ওয়ারফেয়ার স্যুইট (এআইডিইডব্লিউএস) এবং এএন/এএল ই -৪৭ কাউন্টার মেজার্স ডিস্পেন্সিং সিস্টেম।