কাশ্মিরে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী সাবেক এক আফগান যোদ্ধা?

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আধাসামরিক বাহিনী সিআরপিএফের গাড়িবহরে বৃহস্পতিবার হামলা চালিয়েছে জঙ্গি গোষ্ঠী জয়েশ-ই-মুহাম্মদ। গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, এই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হলেন সাবেক আফগান যোদ্ধা আব্দুল রশিদ গাজী।

Terroristsfilephoto-175447966_6

বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীর প্রায় ২৫০০ সদস্যকে নিয়ে ৭০টি গাড়ির একটি বহর জম্মু থেকে কাশ্মির যাচ্ছিলো। এরমধ্যে ৪৪ জন জওয়ানকে বহনকারী একটি বাসের ওপর আত্মঘাতী হামলা চালায় জয়েশ-ই-মোহাম্মদ সদস্যরা। প্রায় সাড়ে তিনশ’ কেজি বিস্ফোরক-ভর্তি গাড়ি নিয়ে বাসটিকে ধাক্কা দেওয়া হয়। এতে ৪০ জনেরও বেশি জওয়ান নিহত হয়। আহত হয় আরও অনেকে। হামলার পর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হামলার দায় স্বীকার করে জঙ্গিগোষ্ঠী জয়েশ-এ-মোহাম্মদ। গোষ্ঠীটি কাশ্মিরে ভারতীয় শাসনের অবসান চায়। মতাদর্শগতভাবে কাশ্মিরকে পাকিস্তানের অঙ্গীভূত করার পক্ষে অবস্থান তাদের।

ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রের ধারণা, সাবেক এই আফগান যোদ্ধা ও আইইডি স্পেশালিস্ট আব্দুল রশিদ গাজী। তিনিই পুলওয়ামা হামলার সম্পূর্ণ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন। গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে এই হামলার ছক তৈরি করা শুরু হয়।

গোয়েন্দাদের দাবি, এই হামলার নেপথ্যে অনেক কারণ রয়েছে। প্রথমত, ৯ ফেব্রুয়ারি ছিল সংসদ হামলার মূলচক্রী আফজল গুরুর মৃত্যুবার্ষিকী। গোয়েন্দা সূত্রমতে, হামলার অনেক আগেই উপত্যকায় প্রবেশ করেছিল হামলাকারীরা।
গত ৩ জানুয়ারি জম্মু-কাশ্মিরেই নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে নিহত হয় জয়েশ-ই-মুহাম্মদ সদস্য তলহা ও উসমান। এই দুই জইশ-ই স্নাইপার কমান্ডো ছিল মাসুদ আজাহারের ভাইপো। ওই ঘটনার পরই জয়েশ-ই-মোহাম্মদ প্রতিশোধ নিতে তার গাজী বাহিনীকে পাঠায়।
গোয়েন্দা তথ্য অনুসারে, ৯ ডিসেম্বর উপত্যকায় অনুপ্রবেশ করে হামলাকারীরা। ডিসেম্বরের শেষে তারা পুলওয়ামায় পৌঁছায় সম্ভবত যাত্রীবাহী গাড়িতে করে। এরপরেই শুরু হয় হামলা। ১০ ফেব্রুয়ারি শ্রীনগরের লালচকে সিআরপিএফের গাড়ি লক্ষ্য করে হয় গ্রেনেড হামলা। এতে সাত নিরাপত্তারক্ষী ও ৪ জন বেসামরিক মানুষ আহত হন।

ভারতীয় গোয়েন্দাদের ধারণা, এই হামলার মধ্য দিয়ে জঙ্গিরা তাদের আসল হামলার ষড়যন্ত্র থেকে গোয়েন্দাদের নজর অন্যত্র সরানোর চেষ্টা করেছিল। আর এসব বিচ্ছিন্ন হামলা চলতে চলতেই ১৪ ফেব্রুয়ারি সবচেয়ে বড় আঘাত হানে গাজীর দল। ভারতের স্বাধীনতার পর জম্মু-কাশ্মিরে এটাই সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলা।