কাশ্মিরে হামলা

বিস্ফোরণের সময় স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন নিহত প্রদীপ

সিআরপিএফ জওয়ান প্রদীপ সিং যাদব জীবনের শেষ ফোন কল ছিল স্ত্রী নিরাজ দেবির কাছে। বৃহস্পতিবার কাশ্মিমেরর পুলওয়ামাতে যখন গাড়ি নিয়ে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয় তখন প্রদীপ ফোনে স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। ওই বিস্ফোরণে প্রদীপসহ ৪৪ জন জওয়ান নিহত হয়েছিলেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এখবর জানিয়েছে।

নিহত জওয়ান প্রদীপের বাবা ও মেয়ে

উত্তর প্রদেশ কান্নাউজ জেলার আজান সুখসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রদীপ। তার স্ত্রী নিরাজ বলেন, স্বামীর সঙ্গে যখন আমি কথা বলছিলাম তখন ফোনের ওপর প্রান্তে ভয়ঙ্কর একটি শব্দ শুনতে পাই। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সবকিছু একেবারে নীরব হয়ে যায় ও কলটি বিচ্ছিন্ন হয়। কিছু একটা ঘটেছে বুঝতে পেরে স্বামীর অবস্থান জানতে চেষ্টা করি। কিন্তু ততক্ষণে আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে।

নিরাজ দেবি বলেন, পরে আমি আরেকটি ফোন পাই। এটা ছিল সিআরপিএফ কন্ট্রোল রুম থেকে। আমাকে জানানো হয়, বিস্ফোরণে আমার স্বামী নিহত হয়েছেন।

পুলওয়ামাতে যখন বিস্ফোরণ ঘটে দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে প্রদীপের স্ত্রী ছিলেন কানপুরে বাপের বাড়িতে। ঘটনার পর পরই ছুটে আসেন শ্বশুড় বাড়িতে। শনিবার গ্রামে পৌঁছেছে প্রদীপের মরদেহ। সকাল নয়টার দিকে টিরভা কান্নাউজে পৌঁছায় জওয়ান প্রদীপ কুমারের মরদেহ। হাজার হাজার শহরবাসী জড়ো হয়ে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানায়।

প্রদীপের দুই কন্যা শিশু রয়েছে, একজন ১০ বছরের সুপ্রিয়া ও অপর জন ২ বছরের সোনা। নিরাজ বলেন, সোনাকে খুব বেশি ভালোবাসতেন তিনি। বৃহস্পতিবার যখন আমার সঙ্গে শেষবার কথা হয় তখনও তিনি সোনার কথা জানতে চেয়েছেন। মেয়ের বিষয়ে তিনি অন্তত ১০ মিনিট কথা বলেছেন।

প্রদীপের পরিবারের এক সদস্য জানান,  প্রদীপের সঙ্গে নিরাজের কথা বলার কয়েক মিনিটের মধ্যেই আমরা তার চিৎকার করে কান্না শুনতে চাই। সিআরপিএফ কন্ট্রোল রুমের ফোন পেয়ে সে কান্নায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

নিহত জওয়ানের মামাতো ভাই সোনু বলেন, আমার ভাই যে আত্মত্যাগ করেছে তাতে আমরা গর্বিত। যদিও আমরা ক্ষুব্ধও। আমরা এখন পদক্ষেপ নাই, আর প্রতিশ্রুতি চাই না।

প্রদীপ খুব ভালো ছাত্র এবং সব সময় দেশের সেবা করতে চাইতো বলে জানিয়েছেন তার এক স্কুল শিক্ষক।