৩০০ কোটি ডলারে রুশ সাবমেরিন ভাড়া করছে ভারত

রাশিয়ার কাছ থেকে পারমাণবিক অস্ত্রবহনে সক্ষম নতুন একটি সাবমেরিন ভাড়া করছে ভারত। ১০ বছরের জন্য এই সাবমেরিন ভাড়া করতে ভারতের ব্যয় হবে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার। রাশিয়া থেকে ভাড়া করা তৃতীয় এই সাবমেরিনটি ২০২৫ সাল নাগাদ ভারতের নৌবাহিনীর হাতে পৌঁছাবে। ভারতের সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, কয়েক মাসের আলোচনার পর এই চুক্তি স্বাক্ষরের কথা বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই ভারতীয় কর্মকর্তা। কাশ্মির সীমান্তে পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে নতুন এই চুক্তি চূড়ান্ত হলেও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল আমান আনন্দ।

samara

মস্কোর কাছ থেকে অস্ত্র কেনা দেশগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের মার্কিন হুমকি অগ্রাহ্য করে রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কেনা অব্যাহত রেখেছে তাদের স্নায়ুযুদ্ধকালীন মিত্র ভারত। গত বছরের অক্টোবরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভারত সফরে মস্কোর তৈরি এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রিতে ভারতের সঙ্গে ৫২০ কোটি ডলারের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

বর্তমানে ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে রয়েছে একটি আকুলা-২ অ্যাটাক সাবমেরিন। ২০১২ সালে রাশিয়ার কাছ থেকে দশ বছরের জন্য ভাড়ায় আনা সাবমেরিনটিকে ‘চক্র-২’ নামে ডাকে ভারতের নৌবাহিনী। নতুন আরও একটি আকুলা-২ সাবমেরিন ভাড়া করতে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আগামী পাঁচ থেকে ছয় বছরের মধ্যে ‘চক্র -৩’ নামে ভারতীয় নৌবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আসবে নতুন সাবমেরিনটি।

দেশটির সামরিক বিশেষজ্ঞ অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল সুদর্শন শ্রীখান্ডে হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, ‘পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন দ্বিতীয় আরেকটি অ্যাটাক সাবমেরিন ভাড়া করা হলে পানির নিচে নৌবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা আরও অনেক বেশি বাড়বে। এছাড়া এটি আমাদের কৌশলগত ও প্রযুক্তিগতভাবে এগিয়ে দেবে। প্রায়োগিক ক্ষেত্রে এগিয়ে রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেবে’।

আকুলা-২ পারমাণবিক অ্যাটাক যান ছাড়াও বর্তমানে ভারতের কাছে ১৩টি প্রথাগত পুরনো সাবমেরিন রয়েছে। ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকে নৌবাহিনীর বহরে যুক্ত হয়েছে আক্রমণে সক্ষম ডিজেল ও বিদ্যুৎচালিত সাবমেরিন আইএনএস কালভরি ও পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী সাবমেরিন আইএনএস আরিয়ান্ত।


গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরের পুলওয়ামায় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর জঙ্গি হামলার জেরে পাকিস্তানের সীমান্তে ঢুকে বোমাবর্ষণ করে ভারতীয় বিমানবাহিনী। পরদিন দুটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে এক পাইলটকে আটকের দাবি করে পাকিস্তান। দুই দিন পর ওই পাইলটকে মুক্তি দেওয়ার পর উত্তেজনা নিরসনের আশা করা হলেও কাশ্মির সীমান্তে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে।
পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা ছাড়াও ভারত মহাসাগরে চীনের প্রভাব বাড়তে থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি উদ্বেগ রয়েছে দিল্লিরও। ২০১৭ সালে হিমালয়ের একটি অঞ্চল নিয়ে একবার মুখোমুখি অবস্থান নেয় দিল্লি ও বেইজিং। এছাড়া চীনের বেল্ট ও রোড ইনিশিয়েটিভ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে দিল্লির।