দ্য ডিপ্লোম্যাট

বাংলাদেশ হয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করছে নাইজেরীয়রা

বাংলাদেশ থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবৈধভাবে নাইজেরীয় নাগরিকরা প্রবেশ করছে। গত কয়েক মাসে অন্তত তেইশ জন নাইজেরীয় নাগরিককে অনুপ্রবেশের দায়ে গ্রেফতার করেছে ভারত। জাপানভিত্তিক এশীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ডিপ্লোম্যাট-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব বিদেশিদের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয়, আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

thediplomat-two-nigerians-arrested-in-meghalaya-credit-meghalaya-police

মেঘালয়ের পুলিশ প্রধান আর চন্ত্রনাথ বলেন, আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিচ্ছি। সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে তবে এখনও উপসংহারে পৌঁছার মতো কিছু হয়নি। যাতে করে নাইজেরীয়দের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানা যাবে।

মেঘালয় রাজ্য সরকারের সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব নাইজেরীয় নাগরিকদের আটক করা হয়েছে তারা দেশটির খ্রিস্টান অধ্যুষিত এলাকার বাসিন্দা। এদের ভ্রমণ সংশ্লিষ্ট সবকিছু নাইজেরিয়ার রাজধানী লাগোসে বাংলাদেশি এজেন্ট দ্বারা ঠিক করা হয়েছে। কীভাবে সীমান্ত পার হয়ে ভারতে প্রবেশ করবে তাও বাংলাদেশি এজেন্ট জানিয়েছে। আদ্দিস আবাবা থেকে ব্যাংকক হয়ে তারা ঢাকায় প্রবেশ করে। এর আগে দলটি ইস্তানবুলে অবতরণ করে।

সূত্রটি আরও জানায়, দলটির সব সদস্য গুয়াহাটি থেকে নয়া দিল্লিগামী ট্রেনে ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছিল। সেখানে অনেক নাইজেরীয় নাগরিক বসবাস করছে। সেখানকার অনেকেই ভারতে মাদক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। তবে পুলিশের ধারণা, ভারতে এই দলের সফরের কারণ হতে পারে সাইবার অপরাধের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করা।

ভারতে নাইজেরীয় নাগরিকরা মাদক সংশ্লিষ্ট মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। নারকোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)-র সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, ২০১৭ সালে ভারতে মাদক অপরাধে গ্রেফতারকৃত বিদেশিদের মধ্যে ৪০ শতাংশই নাইজেরীয়।

এছাড়া গত কয়েক বছরে সাইবার অপরাধের জড়িত থাকার অভিযোগে নাইজেরীয় নাগরিকদের গ্রেফতার করা হয়েছে। দুই বছর পূর্বে মেঘালয় ও দিল্লি পুলিশের একটি যৌথ দল ভারতের রাজধানী থেকে এক ফেসবুক প্রতারককে গ্রেফতার করে। মুম্বাই ও দিল্লিতে জুন মাসে সাইবার অপরাধের দায়ে চার নাইজেরীয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই মামলায় ওই দলটি প্রায় ২ হাজার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে। আয়কর বিভাগের ভুয়া ওয়েব পেইজ বানিয়ে এই জালিয়াতি করে তারা। প্রায় ক্ষেত্রেই স্থানীয় অপরাধীদের সঙ্গে কাজ করে তারা।

রাজস্ব গোয়েন্দা বিভাগের মধ্যমসারির এক কর্মকর্তা দাবি করেন, যদি তারা প্রতারণা করে অর্থ সংগ্রহ করতে পারে তাহলে নিশ্চই তারা একই রুটে বাংলাদেশ ফিরে যায়। যদি তারা দোষী সাব্যস্তও হয় তাহলে কারাবাসের পর তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়। কিন্তু তারা অর্থ পাচার করার ফলে এই ঝুঁকি নেয়।