সামরিক কৌশলেও কৃষকদের ঠেকাতে ব্যর্থ হরিয়ানা পুলিশ

দিল্লি অভিমুখে রওনা দেওয়া হাজার হাজার কৃষককে ঠেকাতে সামরিক বাহিনীর ব্যবহৃত একটি সাধারণ কৌশল প্রয়োগ করেও ব্যর্থ হয়েছে হরিয়ানা পুলিশ। বিজেপি শাসিত রাজ্যটির সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে পরিখা খনন করা হয়। সীমান্তগামী বিভিন্ন সড়কে এই কৌশল ব্যবহারের পাশাপাশি ভারী ট্রাক ও কাঁটাতারের ব্যারিকেডও বসানো হয়। তবে এর সব বাঁধা পেরিয়ে অব্যাহত রয়েছে কৃষকদের দিল্লি চলো কর্মসূচি। ইতোমধ্যে পুলিশ প্রহরায় রাজধানীতে প্রবেশের অনুমতিও পেয়েছে তারা। ভারতের সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।হরিয়ানা সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের পরিখা খোঁড়া হয়

ভারতের বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন প্রবর্তিত কৃষি আইনের প্রতিবাদে বিগত দুই মাস ধরে বিক্ষোভ চলছে। কৃষিনির্ভর দুই রাজ্য পাঞ্জাব এবং হরিয়ানায় এই বিক্ষোভ জোরালো রুপ নেয়। বিক্ষোভের জেরে কৃষক নেতাদের সঙ্গে সরকার বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিলেও তাতে কোনও সমাধানে পৌঁছানো ব্যর্থ হয়। পরে প্রায় পাঁচশ’ কৃষক সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে দিল্লি চলো কর্মসূচি ঘোষণা করে।

বৃহস্পতিবার ওই কর্মসূচিতে বিভিন্ন রাজ্য থেকে হাজার হাজার কৃষক দিল্লি অভিমুখে রওনা দেয়। এদিন পথে পথে পুলিশের সঙ্গে তাদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। শুক্রবার সকালেও কৃষকদের পথ যাত্রা অব্যাহত থাকলে আবারও বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ হয়।

তবে বিজেপি শাসিত হরিয়ানা রাজ্যের পুলিশ পরিখা খননের যে কৌশল ব্যবহার করেছে তাতে কৃষকদের দিল্লি পৌঁছানো ঠেকাতে তাদের মরিয়ে চেষ্টারই প্রতিফলন ঘটেছে। এছাড়াও পুলিশ বালু ভর্তি ট্রাক ও কাঁটাতারে মোড়া ব্যবহার করে সড়ক আটকেছে।

দিল্লি যাত্রা অব্যাহত রাখতে একই ধরনের মরিয়া প্রচেষ্টা চালিয়েছে কৃষকেরা। বৃহস্পতিবার কৃষকদের বিশাল একটি টিয়ার গ্যাস ও পানির স্প্রে উপেক্ষা করে সামনে এগিয়েছে। পুলিশের ওপর ইট ও পাথরের টুকরো ছুঁড়ে তাদের পিছু হটতে বাধ্য করেছে। একটি সেতুতে পুলিশ গাড়ি দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে রাখলেও খালি হাতে তা সরিয়ে ফেলে কৃষকেরা। দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের পর হাজার হাজার কৃষক সেতুটি খালি করে ফেলে হরিয়ানা অতিক্রম করা অব্যাহত রাখে।

পরে দিনের বেলা ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ছবিতে দেখা যায় কৃষকদের দিল্লি পৌঁছানোর সড়কগুলোর আশেপাশে পুলিশ পরিখা খুঁড়ে রেখেছে। বৃহস্পতিবার এক কর্মকর্তা বলেন, পরিকল্পনাটি ছিলো বিক্ষোভকারী কৃষকদের পাঞ্জাব থেকেই দেরি করিয়ে দেওয়া হবে যাতে তারা (হরিয়ানার সীমান্তবর্তী শহর) কার্নালে পৌঁছাতে না পারে।

উল্লেখ্য করোনাভাইরাস লকডাউনের সময়েও বেশ কয়েকটি রাজ্যে এই ধরনের পরিখা খোঁড়ার কৌশল ব্যবহার করা হয়। ওই সময়ে এর উদ্দেশ্য ছিলো পরিযায়ী শ্রমিকদের এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে যাওয়া ঠেকানো। তখন উড়িষ্যা-অন্ধ্র প্রদেশ সীমান্তে এরকম পরিখা খোঁড়ার একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও তামিল নাড়ুতেও একই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানা যায়।