করোনার উদ্বেগের মধ্যে ভারতে কুম্ভ মেলা শুরু

কুম্ভ মেলার শুরুতে ভারতের গঙ্গা নদীর তীরে সমবেত হয়েছে লাখ লাখ তীর্থযাত্রী। বিশ্বের অন্যতম বড় জনসমাগম হিসেবে পরিচিত এই মেলা। এই বছর করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে অন্যতম পবিত্র এই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে পাপ মুক্তির আশায় গঙ্গা নদীতে গোসল করবেন তীর্থযাত্রীরা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের হিসাবে ভারতের চেয়ে কেবল এগিয়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারপরও পৃথিবীর অনেক দেশ থেকেই ভারতে করোনায় মৃত্যুহার অনেক কম। বর্তমানে ভারতে কোনও লকডাউন নেই। এই অবস্থায় কুম্ভ মেলার মতো বড় জমায়েতে সমবেত হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।

ভারতের কর্মকর্তারা বলছেন, তীর্থযাত্রীরা মহামারির গাইডলাইন অনুসরণ করবেন। তবে বেশিরভাগ পূণ্যার্থীই মাস্ক পরেননি। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস কুম্ভ মেলায় গঙ্গা নদীতে গোসল করতে পারলে তা তাদের মোক্ষ লাভ বা তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী বার বার জন্ম নেওয়া ও মৃত্যুবরণ করার চক্র থেকে মুক্তিলাভের সহায়ক হবে।

আর সেই উদ্দেশে উত্তরাখন্ডের হরিদ্বার শহরে গঙ্গা তীরে সমবেত হয়েছেন লাখ লাখ তীর্থযাত্রী। দেশটির সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভির তথ্য অনুযায়ী হরিদ্বারের বিখ্যাত গঙ্গা তীর হার কা পাউডিতে তীর্থযাত্রীরা বেলা তিনটা থেকে সমবেত হওয়া শুরু করে। এর এক ঘণ্টা পর থেকেই গোসল শুরু হয়।

সাধারণত এই কুম্ভ মেলায় লাখ লাখ মানুষ অংশ নেয়। তবে এই বছর কোভিড-১৯ এর ঝুঁকি বিবেচনায় কর্মকর্তারা বেশি মানুষের অংশগ্রহণ নিরুৎসাহিত করেছেন। জেলা কর্মকর্তারা বলছেন, এ বছর কুম্ভ মেলায় কেবল তারাই অংশ নিতে পারবেন যারা করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ হয়েছেন। সব সময় মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে স্থানীয় সাংবাদিকেরা জানিয়েছেন, খুব অল্প সংখ্যক মানুষই এসব নির্দেশনা অনুসরণ করছেন।

সম্প্রতি আদালতের এক শুনানিতে আবেদনকারী উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন এই বছর কুম্ভ মেলায় মানুষের সমাগম যদি নিয়ন্ত্রণ করা না হয় তাহলে এটি কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে, আর এই ধরনের বিশাল সমাগমে নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ বাস্তবায়ন কঠিন হবে।

গত সপ্তাহে কর্মকর্তারা জানান করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে সাড়ে তিন মাসের পরিবর্তে এই বছর কুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হবে ৪৮ দিন। রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে মেলার নিরাপত্তায় এবার ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ডের (এনএসজি) সদস্যদের মোতায়েন করা হবে।