পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে রেড ফোর্টে দিল্লির কৃষকেরা

পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ, টিয়ার গ্যাস আর মোড়ে মোড়ে বসানো কাঁটাতারের ব্যারিকেড ভেঙে দিল্লির ঐতিহাসিক রেড ফোর্টে পৌঁছে গেছে ভারতের আন্দোলনরত কৃষকেরা। ভেতরে প্রবেশের দূর্গের চূড়ায় উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কৃষক আন্দোলনের পতাকা। পূর্ব ঘোষিত ট্রাক্টর র‍্যালি নিয়ে কৃষকেরা মঙ্গলবার দিল্লি অভিমুখে রওনা দিলে তাদের ঠেকাতে মরিয়া হয়ে ওঠে পুলিশ। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

ভারতের নতুন প্রবর্তিত কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে দিল্লি সীমান্তে গত দুই মাস ধরে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করে আসছে কৃষকেরা। দিল্লির প্রবল ঠান্ডার মাঝে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া কৃষকদের সঙ্গে ভারত সরকারের ১১ বার বৈঠক হলেও সেখানে আইন প্রত্যাহার নয়, স্থগিত রাখার প্রস্তাবই দেওয়া হয়েছে। তবে তা মেনে নিতে অস্বীকার করে আসা কৃষকেরা প্রজাতন্ত্র দিবসে ট্রাক্টর র‍্যালির কর্মসূচি ঘোষণা করে।

রেড ফোর্টের মাথায় উড়িয়ে দেওয়া হয় কৃষক আন্দোলনের পতাকা

দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়েছিল, মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ কৃষকেরা মিছিল নিয়ে তিনটি নির্দিষ্ট রুট ঘুরে আবারও শুরুর স্থানে ফিরে আসবে। তবে পুলিশের ওই ঘোষণা মানেনি কৃষকেরা। সকাল থেকে নিজেদের অবস্থান ছেড়ে দিল্লির দিকে ছুটতে থাকে তারা। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে কৃষকেরা এগুতে থাকলে দিল্লির নয়ডা মোড়, আইটিও মোড়, এসবিটি এলাকায় কৃষকদের সঙ্গে পুলিশে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নয়ডা মোড়ের একাধিক ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, রাজধানীর দিকে এগুতে থাকা কৃষকদের ওপর টিয়ার গ্যাস ছুড়ছে পুলিশ। পাশাপাশি চালানো হয়েছে লাঠিচার্জ। তবে কোনও কিছুতেই পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আসেনি। সব বাধা উপেক্ষা করেই এগিয়ে যেতে থাকে কৃষকদের মিছিল।

আইটিও মোড়ে পুলিশের স্থাপন করা কাঁটাতারের ব্যারিকেড ভেঙে বিপুল সংখ্যক ট্রাক্টর নিয়ে দিল্লির ভেতরে ঢুকে পড়ে কৃষকেরা। কাছে থাকা পুলিশ সদর দফতরে বিক্ষোভরত কৃষকেরা ঢুকে পড়েন কিনা তা নিয়েও আশঙ্কা তৈরি হয়।

রয়টার্স টেলিভিশনে প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, বিক্ষোভরত হাজার হাজার কৃষক ঐতিহাসিক রেড ফোর্টে প্রবেশ করেছে। সেখানে আসা পাঞ্জাবের ৫৫ বছর বয়সী কৃষক সুখদেব সিং বলেন, ‘(প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র) মোদিকে আমাদের কথা এখন শুনবেন, তাকে এখন আমাদের কথা শুনতে হবে।’

ট্রাক্টর র‍্যালির আয়োজক সম্মিলিত কিষান মোর্চা এক বিবৃতিতে জানিয়ে রেড ফোর্টে ঢুকে পড়ার কর্মসূচি তাদের ছিলো না। বিক্ষোভরত কৃষকদের একাংশ নির্দিষ্ট রুট ছেড়ে বেরিয়ে সেখানে ঢুকে পড়ে।

মোর্চার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাদের সব নেতারাই নির্ধারিত রুট অনুসরণ করেই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে।