গঙ্গার তীরে হাজার হাজার মরদেহ, ভিড় করছে চিল-শকুন

ভারতের উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও বিহারে গঙ্গা নদীতে অসংখ্য মরদেহ ভাসতে দেখা যাওয়ার পর এবার নদীর তীরে মৃতদেহ মাটিচাপা দেওয়ার খবর সামনে এসেছে। গঙ্গার এক হাজার ১৪০ কিলোমিটার যাত্রাপথে দুই হাজারের বেশি মরদেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে বলে খবর দিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা।

প্রতিদিন তিন লাখের বেশি আক্রান্ত হলেও ভারতে দৈনিক করোনা সংক্রমণ কিছুটা কমতে শুরু করেছে। শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে তিন লাখ ২৬ হাজার ৯৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়ালো দুই কোটি ৪৩ লাখ ৭২ হাজার ৯০৭। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের মোট পরিমাণ সরকারি হিসেবের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি।

আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে, উত্তরপ্রদেশের বিজনৌর, মিরাট, মুজাফফরনগর, বুলন্দশহর, হাপুর, আলিগড়, বদায়ু, শাহজাহানপুর, কনৌজ, কানপুর, উন্নাও, রায়বরেলি, ফতেপুর, প্রয়াগরাজ, প্রতাপগড়, মির্জাপুর, বারানসী, গাজিপুর, বালিয়া প্রভৃতি জেলায় গঙ্গার তীরে মরদেহ মাটিচাপা দিতে দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থা কানপুর, কনৌজ, উন্নাও, গাজিপুর ও বালিয়ার।

কনৌজের মহাদেবী ঘাটের কাছে সাড়ে তিনশ’র বেশি মৃতদেহ কবর দেওয়া হয়েছে। ঘাটে কর্মরত এক ব্যক্তি জানান বার বার মরদেহ চাপা দেওয়া হলেও নদীর পানি বাড়লেই তা সরে যাচ্ছে। ফলে অনেক মৃতদেহ আবারও নদীতে ভেসে যাচ্ছে।

কানপুরের শেরেশ্বর ঘাটের কাছেও একিই দৃশ্য। স্থানীয়দের দাবি চারশ’র বেশি মরদেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে সেখানে। মাটি সরে মরদেহ বের হয়ে পড়লে তার উপর বসছে চিল-শকুন। পরিবেশবিদদের আশঙ্কা এ থেকে সংক্রমণ ও দূষণ ছড়াতে পারে।

উন্নাওয়ের শুক্লাগঞ্জ ও বক্সার ঘাটের কাছে নয়শ’র বেশি মরদেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। অনেক মৃতদেহ বের করে নিচ্ছে শেয়াল-কুকুর। পার্শ্ববর্তী ফতেপুরে গঙ্গার তীরেও মরদেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।

পুরো উত্তরপ্রদেশ জুড়ে একই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। পরিবেশবিদরা বলছেন, করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতদের এভাবে নদীতে ফেলে দেওয়া হলে সংক্রমণ দ্রুত ছড়াতে পারে। এছাড়া নদীর পানি দূষণের আশঙ্কাও থাকছে।