ভারতের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে গঙ্গা নদীর বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। তাদের বিশ্বাস, এই নদীতে স্নান করার মাধ্যমে পাপমোচন ঘটে। প্রতিদিন সেখানে গোসল করে হাজার হাজার মানুষ। ভারত সরকারের তথ্য অনুযায়ী, গঙ্গার তীরে প্রায় সাড়ে চার হাজার গ্রাম রয়েছে। তবে সম্প্রতি উত্তর প্রদেশে গঙ্গার পানির রঙ বদলে গিয়ে সবুজ হয়ে গেলে রাজ্যের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, বর্ষাকালে বিভিন্ন পুকুর ও লেক থেকে শ্যাওলা ও শৈবালের ব্যাপক প্রবাহের কারণে নদীটি হালকা সবুজ হয়ে যায়। ভিপুল ভাটস নামের স্থানীয় একজন বাসিন্দা জানান, বেশিরভাগ মানুষই পবিত্র এ নদীতে ডুব দিতে পারে না কিংবা পান করার মতো অন্যান্য কাজে এর পানি ব্যবহার করতে পারে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মাইক্রোসিসটিস শেওলার কারণে নদীর সবুজ রঙ ধারণ করতে পারে। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের মালভিয়া গঙ্গা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান বি.ডি. ত্রিপাঠি। রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুটনিক-কে তিনি বলেন, ‘চাক্ষুষ পর্যবেক্ষণ থেকেই দেখা যায় এই আস্তরণ বা অ্যালগাল ব্লুমগুলো (নদী বা সমুদ্রে অধিক সংখ্যক শৈবালের জন্মের ফলে পানির ওপর তৈরি হওয়া এক ধরনের আস্তরণ) মাইক্রোকাইস্টিস নামের শৈবাল দ্বারা গঠিত। এটি সাধারণত স্থবির পানিতে পাওয়া যায়। পার্শ্ববর্তী কোনও ড্রেন থেকে বা বৃষ্টির সময় এটি গঙ্গায় প্রবেশ করেছে।’
যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বাধীন উত্তরপ্রদেশের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার বিষয়টির প্রতি নিবিড় নজর রাখছে। তবে এখন পর্যন্ত উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি বলে জানিয়েছে তারা।
বিষয়টি নিয়ে স্পুটনিকের সঙ্গে কথা বলেছেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের আঞ্চলিক কর্মকর্তা কালিকা সিং। তিনি বলেন, ‘শেত্তলাগুলো বারাণসী বা প্রয়াগরাজে বেড়ে উঠেনি, এগুলো উজান থেকে এসেছে। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। গঙ্গার দ্রবীভূত অক্সিজেনের স্তরও পরীক্ষা করা হয়েছে। সেটি স্বাভাবিক পাওয়া গেছে।’
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে গঙ্গার দুষণমুক্তির জন্য ঢাক ঢোল পিটিয়ে ‘নমামি গঙ্গে’ নামের একটি প্রকল্প চালু করে ভারতের মোদি সরকার। এজন্য ২০০ বিলিয়ন ভারতীয় রুপি বরাদ্দ করা হয়। সূত্র: স্পুটনিক।