বুক ফুঁড়ে শিরদাঁড়া ভেঙে দিয়েছিল রড,  সফল অস্ত্রোপচার

সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়ে পেটে রড ঢুকে গিয়েছিল এক তরুণীর। তবে শেষ পর্যন্ত জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এ যাত্রায় বেঁচে গেছেন তিনি। ১৫ ঘণ্টা ধরে তার বুকে বিঁধে থাকা রড সফলভাবে বের করতে সমর্থ হয়েছেন ভারতের এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকরা। দীর্ঘ প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টার অপারেশন মঙ্গলবার ভোরে সফলভাবে শেষ হয়। কার্ডিওথোরাসিক বিভাগের চিকিৎসক শুভেন্দু শেখর মহাপাত্রের নেতৃত্বে একটি দল এই অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেন।

গত রবিবার পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার ২১ বছরের ওই তরুণী। দুর্ঘটনার সময় অটোর চালকের আসনের পাশে থাকা একটি রড তাকে কার্যত ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। এই অবস্থায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে।

পরীক্ষা করে চিকিৎসরা দেখেন, রডটি তরুণীর বুক ফুটো করে ফুসফুসের নিচ হয়ে হৃৎপিণ্ডের পেছন দিক দিয়ে বাঁ-দিকের বুক ফুটো করে দিয়েছে। সৌভাগ্যক্রমে ফুসফুস ও হৃৎপিণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়ায় প্রাণে বেঁচে ছিলেন ওই তরুণী। তবে তার শিরদাঁড়া এবং লিভার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শিরদাঁড়া ফুটো হয়ে যায়। পেট ও বুকের মাঝের মাংসপেশীও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রোগী সোজা হয়ে শুতেই পারছিলেন না। ফলে তাকে উপুড় করে শুইয়েই অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্রোপচার শুরু করা যায়নি। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর তরুণীর পরিবারের সদস্যরা রক্ত জোগাড় করে আনলে সোমবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ শুরু হয় অস্ত্রোপচার। শেষ হয় মঙ্গলবার ভোরে।

আপাতত ওই তরুণী বিপদমুক্ত। কিন্তু যেভাবে তার শিরদাঁড়া ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে, তাতে আগামী দিনে রোগীকে নিয়ে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। রোগীর শরীরের নিচের অংশে আপাতত কোনও সাড়া নেই। চিকিৎসকদের আশঙ্কা, ভবিষ্যতে তার শরীরের নিচের অংশ অসাড় হয়ে যেতে পারে। সংক্রমণের আশঙ্কাও রয়েছে।