বিজ্ঞানীদের অনুমোদন ছাড়াই টিকার দুই ডোজের ব্যবধান বাড়িয়েছে ভারত

করোনাভাইরাসের কোভিশিল্ড টিকা দুই ডোজ নেওয়ার মধ্যবর্তী ব্যবধান প্রায় দ্বিগুণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার। তবে এই সিদ্ধান্তে সম্মতি ছিলো না দেশটির বিজ্ঞানীদের। টিকাদান বিষয়ে জাতীয় পরামর্শক দলের (এনটিএজিআই) তিন সদস্য এ তথ্য জানিয়েছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

করোনাভাইরাসের মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে টিকা সংকটে পড়ে ভারত। এই সংকট মোকাবিলায় গত ১৩ মে দুই ডোজ টিকা নেওয়ার মধ্যবর্তী ব্যবধান ছয় থেকে আট সপ্তাহ বাড়িয়ে ১২ থেকে ১৫ সপ্তাহ করা হয়। ওই সময়ে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় এনটিএজিআইয়ের সুপারিশ এবং ব্রিটেনের বাস্তবভিত্তিক প্রমাণের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এনটিজিএআই এর ১৪ সদস্যের মধ্যে তিন জন জানিয়েছেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তাদের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত ছিলো না।

ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিলোজি’র সাবেক পরিচালক এবং  সদস্য এম.ডি. গুপ্ত জানিয়েছেন এনটিএজিআই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী ৮-১২ সপ্তাহের ব্যবধান বাড়ানোর কথা বলে। ১২ সপ্তাহের বেশি ব্যবধান বাড়ানোর সুপারিশ করার মতো পর্যাপ্ত তথ্য এনটিএজিআইয়ের কাছে ছিলো না বলে জানান তিনি।

এনটিএজিআই সদস্য এম.ডি. গুপ্ত বলেন, ‘আমরা সবাই আট থেকে ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত সময়সীমা মেনে নিয়েছি, কিন্তু ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ পর্যন্ত সময়সীমার সিদ্ধান্তটি সরকারের নেওয়া। এটা ঠিক থাকতেও পারে, নাও থাকতে পারে। আমাদের কাছে এ ব্যাপারে কোনো তথ্য নেই।’

একইরকম মত দেন এনটিএজিআইয়ে তার সহকর্মী ম্যাথিউ ভারগিজ। তিনি জানান, তাদের সুপারিশ ছিলো ৮-১২ সপ্তাহ ব্যবধান রাখার।

তবে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক টুইট বার্তায় দাবি করেছে এনটিএজিআই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই দুই ডোজের ব্যবধান বাড়ানো হয়। এনটিএজিআই সদস্যদের মধ্যে কোনও ভিন্নমত ছিলো না বলেও দাবি করা হয়েছে ওই বার্তায়।

এনটিএজিআইয়ের আরও এক সদস্য জে পি মুলিইল জানান, প্রথম ডোজ নেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার যে সময়ের পার্থক্য তা বাড়ানোর বিষয়ে এনটিএজিআই সিদ্ধান্ত নিলেও সেটা ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ করার কোনো সুপারিশ করা হয়নি।