৬২ গাছে কোপ, জরিমানা ৪৫ কোটি টাকা

ব্যবসায়িক কাজের জন্য বৃক্ষ নিধনের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের একটি নির্দেশ বিভিন্ন মহলে তুমুল সাড়া ফেলেছে। ৬২টি গাছ কাটার দায়ে একটি প্রতিষ্ঠানকে ৪০ কোটি রুপি জরিমানা করেছেন আদালত। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৫ কোটি ৬৯ লাখ ৪১ হাজার ৭৪৬ টাকা।

জরিমানা ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটিকে ওই জায়গায় ১০০টি গাছ লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এই নির্দেশকে নজিরবিহীন ও দৃষ্টান্তমূলক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন পরিবেশকর্মী এবং বন বিভাগ সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, গাছ বাঁচাতে এমন শাস্তিই দরকার। কেননা, পরিবেশ ধ্বংস করে উন্নয়ন হতে পারে না।

সাত তারকা হোটেল তৈরির জন্য রাসেল স্ট্রিটে ওই ৬২টি গাছ কাটা হয়েছিল। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কিছু ব্যবস্থা নেয় বন দফতর ও রাজ্য সরকার। তবে এর বিরুদ্ধে হাই কোর্টে যায় তারা। সেখানেই বড় ধরনের জরিমানা করা হয় প্রতিষ্ঠানটিকে।

রায় ঘোষণার দিন বিচারপতি মান্থার এজলাসে বিষয়টি উঠলে বন দফতরের তরফে সব নথি জমা দেওয়া হয়। উভয় পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে বিচারক জানান, এতো গাছ কাটার গুরুতর অপরাধে শুধু কারাদণ্ড নয়, প্রয়োজন আর্থিক দণ্ডও। সেই জরিমানার তহবিল পরিবেশ রক্ষায় ব্যবহার হবে। নির্দেশ জারির ১৫ দিনের মধ্যে জরিমানা জমা পড়লে মামলা নিষ্পত্তির সুযোগ থাকবে।

আইনজীবীরা বলছেন, জরিমানা জমা না দিলে আদালত অবমাননার অভিযোগ করতে পারেন কলকাতার ডিএফও (ইউটিলাইজেশন)। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানেরও অবশ্য ডিভিশন বেঞ্চে বা সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের অবস্থানও যথেষ্ট কঠোর।

বন দফতর সূত্র জানিয়েছে, ওই জমিতে নতুন গাছ লাগানোর যথেষ্ট পরিসর রয়েছে। সেটি কিভাবে লাগানো হবে, বন দফতরই তা ঠিক করে দেবে। আর আদালতের এই নির্দেশ বেআইনিভাবে গাছ কাটা রুখতে অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠবে। সূত্র: আনন্দবাজার।